

ভোটারদেরকে ভোটের অধিকার দিতে হবে অন্যথায় প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ১৯৯১ সালের আগে মানুষ মনে করতো কয়েকটা হুন্ডা আর কয়েকজন গুন্ডা হলেই নির্বাচন ঠাণ্ডা। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে না পারলে কখনই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। বিচারপতি ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রউফ এ কথা বলেন।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে স্বাধীনতা ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদ আয়োজিত ‘নিরাপত্তা সংকটে নাগরিক জীবন: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে আব্দুর রউফ বলেন, বাজেটে আগে কালো টাকা সাদা করার অবাধ সুযোগ দিয়েছিলেন। এমন ধাক্কা লেগেছে যে, কালো টাকা আর সাদা করার কোনো সুযোগ নেই। আজকে এ অশান্তির জন্য কালো টাকাই দায়ী।
রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বেশি করে পড়ুন এবং জানুন। বর্তমানে রাজনীতিতে থিংক-ট্যাংক ছাড়া সামনে এগুতে পারবেন না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম বলেন, প্রতি জেলায় গডফাদারের জন্ম দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আগে এসব গডফাদাররা নিজেরা গুলি করে মারতো। এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে কৌশলে হত্যা করায়।
তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কলুষিত করার কারণেই এ পরিস্থিতিরি সৃষ্টি হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছে। তাই এখন তারা মাসোহারা পাওয়ার জন্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।
বর্তমান রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ এখন মনে করেন রাজনীতি এখন আতঙ্কের বিষয়। জনপ্রতিনিধি হতে হলে গুন্ডাবাহিনী লাগবে। এই সমস্যাগুলোর সমাধান শুধু একটি রাজনৈতিক দল করতে পারবে না। ১৯৫২ ও ১৯৭১ সালে দেশে যে সংকট দেখা দিয়েছিল সেখানে শুধু রাজনৈতিক দল নয় বরং দেশের সকলের অংশগ্রহণেই তার সুন্দর সমাধান হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অধ্যাপক ড. মাহবুবুল্লাহ বলেন, এখন মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই। সারাদেশে গুম-খুন চলছে। দেখে মনে হয় বাংলাদেশ একটি ভঙ্গুর রাষ্ট্রের দিকে এগুচ্ছে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অত্যাচারীদের হাত অনেক লম্বা। বর্তমান রাজনীতির অপ-সংস্কৃতিকে বাদ দিতে হবে। দেশের স্বার্থে রাজনীতিকে ঢেলে সাজাতে হবে। দল গোছতে হবে। জনস্বার্থে কথা বলতে হবে। গুলশানের এসি, গাড়ি-বাড়ি ছেড়ে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। আর না হয় মহাসিন্ধু পার হতে পারবেন না।
ভারতের আগ্রাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র এদেশের রাজনীতিসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক হস্তক্ষেপ করছে। এতে মনে হয় না বাকি জীবনে দেশে শান্তি ফিরে আসবে।
সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহর সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন যুবদলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।
জেইউ/এ এস