
বাংলাদেশে দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূরীকরণে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সবচেয়ে বড় বাধা। এ বাধা দূর করতে না পারলে কোনও বৈষম্যই দূর হবে না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান। বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘দারিদ্র ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কাজী খলীকুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের মতো একটি ছোট দেশে জনসংখ্যা শুধু সমস্যাই নয়, সম্ভাবনাও। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে হলে আয় বৈষম্য, সামাজিক বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্যসহ সকল বৈষম্য দূর করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক ভালো ও জ্ঞানী লোক আছেন যারা রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারকদের অসহযোগিতার কারণে তাদের মেধাকে কাজে লাগাতে পারছেন না, এমনকি বাধ্য হয়ে অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। তাই দারিদ্র্য ও বৈষম্য দূর করতে হলে আমাদের সম্ভাবনাময় মেধাকে কাজে লাগাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) র মেয়াদ শেষ হবে ২০১৫ সালে। এমডিজিতে বাংলাদেশের সাফল্য যেমন আছে তেমনি বেশকিছু চ্যলেঞ্জও রয়েছে। তাই সাফল্যের এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উন্নয়নের অবকাঠামো নির্ধারণ করা খুবই জরুরি বলে মত দেন তিনি।
গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদ (বিইউপি) আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিইউপির নির্বাহী পরিচালক ড. নিলুফার বানু।
গ্লোবাল কল টু অ্যাকশন অ্যাগেইনষ্ট পোভার্টি (জিসিএপি) বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় আয়োজিত সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন জিসিএপি বাংলাদেশ এর জাতীয় সমন্বয়ক আব্দুল আউয়াল, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড.কাজী মেজবহ উদ্দিন আহমদ, ওয়েব ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মো: মহসিন আলী প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের আয় বৈষম্য দশমিক ৪৫৮ শতাংশ। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এই বৈষম্য মোটেও সন্তোষজনক নয়। তাই দারিদ্র্য কমাতে হলে এই বৈষম্য অবশ্যই দূর করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্য বৃদ্ধির অন্যতম আরেকটি কারণ হলো জলবায়ুর পরিবর্তন। উন্নত দেশগুলোই এই পরিবর্তনের জন্য বেশি দায়ী। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে প্রাকৃতিক দূর্যোগ সৃষ্টি হয় তা থেকেও দারিদ্র্যতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে যা সামষ্টিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাধার সৃষ্টি করছে।