
প্রচণ্ড খরার কারণে রাজশাহী জেলায় পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। আবার সেচের অভাবে চাষকৃত পাটগাছ বাড়তে পারছে না। পাশাপাশি তাপদাহের কারণে পাটগাছগুলো নেতিয়ে পড়ছে।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১২ হাজার ২৩৩ হেক্টর। কিন্তু এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৩১৭ হেক্টর জমিতে।
জেলার বোয়ালিয়ায় পাটচাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয় ২০ হেক্টরের বিপরীতে ১৭ হেক্টর। পবা উপজেলায় এক হাজার ৭১০ হেক্টরের বিপরীতে ৭৬৫ হেক্টর। মোহনপুরে ৭৫ হেক্টরের বিপরীতে ২০ হেক্টর। বাগমারায় ৩ হাজার ৮৮ হেক্টরের বিপরীতে ১ হাজার ৬২০ হেক্টর। দুর্গাপুরে এক হাজার ৫৪০ হেক্টরের বিপরীতে ১ হাজার ৩৬০ হেক্টর। পুঠিয়ায় এক হাজার ৯০০ হেক্টরের বিপরীতে এক হাজার ৫৫০ হেক্টর। গোদাগাড়িতে ৯৩৫ হেক্টরের বিপরীতে ২২৫ হেক্টর। চারঘাটে ৪০০ হেক্টরের বিপরীতে ১২০ হেক্টর এবং বাঘা উপজেলায় ২ হাজার ৫৫৫ হেক্টরের বিপরীতে এক হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ও গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপের অভাবে বাংলাদেশে সোনালী আঁশের সোনালী দিন আর নেই। চাষিরা এক বছর পাটের দাম ভালো পেলেও পরের বছরে পান না। আবার দেশে পাট মন্ত্রাণালয় ও এ শিল্পের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকলেও গতানুতিকভাবে চাষিদের নির্ভর করতে হয় ভারতীয় বীজের ওপরে। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা পাটবীজে লাভবান হলেও বেশিরভাগ সময়ে চাষিদের লোকসান গুনতে হয়। তবে আশার কথা এই যে বিদেশে পাটের রপ্তানি কমে গেলেও দেশে ছোট ছোট পাটকল প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠায় পাটের চাহিদা বাড়ছে।
বিশেষ করে রাজশাহী জেলায় জুট মিল বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়ভাবে পাটের চাহিদা বাড়ছে। গত বছর চাষিরা লাভবান হয়নি। এরপরও লাভের আশায় জেলায় অনেক জমিতে পাটচাষের সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় আগাম বোনা ক্ষেতের পাটগাছ সবুজতায় বেড়ে উঠছে। অনাবৃষ্টিতে আগাম পাটে সেচের প্রয়োজন হচ্ছে। বৃষ্টির অভাবে অনেক জমিতে চাষিরা এখনো পাটবীজ বুনতে পারেনি।
অনেক চাষি এরই মধ্যে সেচ দিয়ে আগাম পাট বুনেছেন। বাকি পাটচাষিরা জমিতে পাট বুনতে বৃষ্টির অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু পাটের জিন আবিস্কারের পরেও সরকারিভাবে পাটের ভালো বীজের সরবরাহ না থাকায় চাষিরা ভারতের বীজের ওপর নির্ভর করে পাট চাষ করছেন। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে অনেক কৃষক প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ আছে। এরপরও পাটচাষে ইচ্ছা থাকলেও বৃষ্টিপাতের অভাবে তা হয়ে উঠছে না। যে কারণে এবার জেলায় পাটচাষের লক্ষমাত্রা পূরণ হবে না বলে চাষি ও ব্যবসায়ীরা আশংকা করছেন।
কেএফ