
ফার্নিচার শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক কমানোর আবেদন করেছেন বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (বিএফআইওআর)। সেই সঙ্গে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পোশাক শিল্পের মতো রপ্তানি করা পণ্যের ওপর নগদ সহায়তার দাবি জানান তারা।
সোমবার সকালে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পের নেতাদের সঙ্গে প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় সংগঠনটি এই দাবি জানান।
সংগঠনটির প্রতিনিধি লেকার ও উড কোটিংস থেকে শুল্ক কাঠামো ১২ শতাংশ ধার্য করার আবেদন করেন। এখন আমদানি করা এই পণ্যটির ওপর সর্বমোট ৭৪ শতাংশ কর ধার্য রয়েছে। বলা হয়, উচ্চ শুল্কের কারণে লেকার করা ফার্নিচারের মূল্য সাধারণ বার্নিশ করা পণ্যের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। সংগঠনটি মনে করে এটি করা হলে ফার্নিচারের মূল্য হ্রাস পাবে। সেই সঙ্গে এর ব্যবহারও বাড়বে।
স্যান্ড পেপারসের ওপর ধার্য করা ৭৪ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্ক্রু, বোল্ট, ফার্নিচারের তালা ও কব্জার ওপর থেকে বিদ্যমান শুল্ক কমিয়ে ১২ শতাংশ করার দাবি করা হয়। এখন স্ক্রুও বোল্টের ওপর ৫৪ শতাংশ, ফার্নিচারের তালার ওপর ৭৪ শতাংশ এবং কব্জার ওপর ৫৪ শতাংশ কর ধার্য রয়েছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আমদানি শুল্ক কমালে দেশীয় বাজারে পণ্যটির মূল্য কমে আসবে। বিশ্ববাজারে মানসম্মত ফার্নিচার রপ্তানি করা যাবে, যা ফার্নিচার শিল্পে সুনাম অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
কাঠের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। বর্তমানে কাঠ আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বলবৎ রয়েছে। বলা হয়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য কর পরিশোধ করে ফার্নিচার শিল্পে টিকে থাকা দুরুহ হয়ে পড়েছে। তাই দেশীয় ফার্নিচার ব্যবসায়ীদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে পণ্যটির ওপর ধার্য করা শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
এমডিএফ বোর্ড, পার্টিকেল বোর্ড ও মেলামাইন বোর্ডের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়। এমডিএফ বোর্ডের ওপর বিদ্যমান আমদানি শুল্ক ৫৪ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ, পার্টিকেল বোর্ডের ওপর বিদ্যমান ৭৪ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ ও মেলামাইন বোর্ডের ওপর বিদ্যমান ৭৪ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে ধার্য করার প্রস্তাব করা হয়।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এসব আমদানি পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করা হলে দেশজ শিল্পে ক্ষতির আশঙ্কা কমবে। বাজারে আমদানি করা ও স্থানীয় পণ্যের সুস্থ প্রতিযোগিতা হবে। যা পার্টিকেল বোর্ডের বাজারকে আরও স্থিতিশীল করবে বলে মনে করে সংগঠনটি।
সংগঠনটির প্রতিনিধির পক্ষ থেকে বলা হয়, এবারের বাজেটে বিষয়গুলো প্রাধান্য পেলে দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের ব্যাপ্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে অধিক লোকের কর্মসংস্থান হবে। আমদানি নির্ভরতা কমবে। পণ্যের মান উন্নয়নসহ প্রতিযোগিতামূলক বাজারের টিকে থাকতে ভূমিকা রাখবে।
তাছাড়া, কাঠ ও কাঠের বিকল্প পণ্যের আমদানিকে উৎসাহিত করে দেশীয় বনভূমি অপরিকল্পিত উজাড় থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করে সংগঠনটি।
এসইউএম/এআর