
তিস্তার পানি নিয়ে ভারতের এক তরফা সিদ্ধান্তের কারণে এবার বোরো মৌসুমে কৃষকের ৩শ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানালেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি।
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিলে কদম ফোয়ারার সামনে তারা সমাবেশ করে। সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ঘেরাও কর্মসূচিতে গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ কনভেনসন প্রস্তুতি কমিটি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বেশ কয়েকটি বাম ধারার দল অংশ নেয়।
বুধবার বেলা ১২টায় প্রেসক্লাবের সামনে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার নেতা-কর্মীরা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি শেষে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার লংমার্চ শেষে আজ বাম মোর্চার সমন্বয়ক অধ্যাপক আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে বাম মোর্চার নেতা-কর্মীরা পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ করতে গেলে দুপুর ১২ টার সময় পুলিশ কাঁটা তারের বেরিকেড দিয়ে তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। পরে তারা বেরিকেড সরিয়ে ফেলে মন্ত্রণালয় অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে পুলিশ তাদেরকে কদম ফোয়ারার সামনে আটকে দেয়। এ সময় বাম মোর্চার নেতাদের সাথে পুলিশের কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়। এরপর পুলিশ তাদের ওখানেই থামিয়ে দেয়। তবে কেউ আহত হয়নি। একপর্যায়ে বাম মোর্চার নেতারা সেখানেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
সমাবেশে জুনায়েদ সাকি বলেন, ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশর ৫৪টি নদীকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তারা নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহে বাধা দিচ্ছে। এর ফলে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার সব কিছু জেনেশুনেও এ বিষয়ে নিরব রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকারের সামনে ভারতের মনমোহন সিং বলেছেন, তিস্তার পানি প্রবাহে স্বাভাবিক গতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেশবিরোধী এত বড় মিথ্যাচার করলেও তিনি এ বিষয়ে নিশ্চুপ রয়েছেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সামনে গিয়ে মিউ মিউ করে। তার কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না।
পররাষ্টমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দায়িত্ব পালন করতে না পারলে শিগগিরই পদত্যগ করুন। কারও দাসত্ব করে বাংলাদেশকে ধ্বংস করবেন না।
তিনি বলেন, পানি নিয়ে বাংলাদেশের আরেকটা বড় যুদ্ধ করা ছাড়া সামনে আর কোনো বিকল্প উপায় থাকবে না। সে লক্ষ্যে সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।
নদী কোনো দেশের একার সম্পদ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, একঘেয়েমি সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশকে তিস্তার পানি থেকে বঞ্চিত করছে ভারত। এর ফলে বাংলাদেশের কৃষি ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে।
সাকি বলেন, ভারত বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ৬ হাজার মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ নিচ্ছে। কিন্তু তিস্তা সমস্যা ও রামপাল বিদ্যুৎসহ ভারতের বাংলাদেশ বিরোধী সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে সরকার কিছুই বলে না।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ভারত বলেছে এক মাসের মধ্যে তিস্তার পানি সমস্যা নিরোধে তাদের প্রতিনিধি পাঠাবে। কিন্তু এক মাস পার হয়ে গেলেও এখনও তারা কোনো প্রতিনিধি পাঠায়নি। এতে বোঝা যাচ্ছে তারা এ বিষয়ে সমাধানে আসবে না।
মোশরেফা মিশু বলেন, নদী ও পানির সমস্যা সমাধান করার জন্য আন্তর্জাতিক আইন আদালত থাকলেও সরকার এ বিষয়ে কোনো ভূমিকা নেয়নি।
জেইউ/