পয়লা বৈশাখ মানেই বাহারি রঙের পোশাক, নানা রকম সাজ। পোশাক না হলে যেন বৈশাখ পূর্ণতা যেন পায় না। সেই সাথে পোশাকের সাথে ম্যাচ করা জুতার গুরুত্বও উড়িয়ে দেবার নয়।
এজন্য পরিপূর্ণ ফ্যাশন করতে পোশাকের পাশাপাশি পায়ের জুতাটাও হওয়া চাই ফিটফাট। সেদিকে লক্ষ রেখেই জুতা কোম্পানিগুলো নতুন ডিজাইন আনার পাশাপাশি বৈশাখ উপলক্ষে জুতায় দিচ্ছে বিশেষ ছাড়।
রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, বৈশাখ উপলক্ষে এপেক্স ফুটওয়্যারের বিভিন্ন আউটলেটকে সাজানো হয়েছে নান্দনিক নববর্ষের প্লেকার্ড দিয়ে। এ উপলক্ষে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে ৫০০ টিরও বেশি ডিজাইনের ওপর। জিলস শপের একটি ডিজাইনে ৮ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে কোম্পানিটি। তবে জেনিস জুতার ক্ষেত্রে স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ভিসা কার্ড ব্যবহারকারীদের ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
জুতা ও ডিজাইনের নাম:
পুরুষদের ক্ষেত্রে স্যান্ডেল, স্লিপার, স্নিকার, চপ্পল ও অন্যান্য জুতায় কমন কালারগুলোরই প্রাধান্য বেশি। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে স্যান্ডেল ও জুতায় আপার এবং স্টোনে লাল, ব্রাউন, ডার্ক ব্রাউন, সবুজ, আকাশী, নীল, বেইজ ও সাদা রঙের চাহিদা বেশি। জেনিসে ছেলেদের জন্য রয়েছে এক্সেল কনভার্স, আর মেয়েদের জন্য রয়েছে পারলিটা, বেলাডোনা।
জুতা কোম্পানি:
বাটা, এপেক্স, বে এম্পোরিয়াম, জেনিস, জেলিস, লোটো স্টোর, সামপান এবং এছাড়া বিভিন্ন শপিং মলের স্টোর ও সাধারণ জুতার মার্কেটে পাবেন আপনার পছন্দের জুতা।
দরদাম:
পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে এপেক্স ৫০০ টিরও বেশি ডিজাইনের ওপর বিশেষ ছাড় দিচ্ছে। বিভিন্ন ডিজাইনে ১০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে।
জেন্স ডিজাইনের ১৪৫০ টাকার জুতা বিক্রি করছে ৮০০ টাকা, ১ হাজার ৮৫০ টাকার জুতা ১ হাজার ২০০ টাকা, ২ হাজার ৬০০ টাকার জুতা ১ হাজার ৮০০ টাকা, ১ হাজার ৬০০ টাকার জুতা ১ হাজার টাকা, ৯৯০ টাকার জুতা ৫০০ টাকা, ১৮৫০ টাকার জুতা বিক্রি করছে ১ হাজার টাকায়।
লেডিস ডিজাইনের মধ্যে ৮৯০ টাকার জুতা ৫০০ টাকা, ৭৯০ টাকার জুতা ৪০০ টাকা, ৬৬০ টাকার জুতা ৩০০ টাকা এবং ছোটদের ডিজাইনের ৪৯০ টাকার জুতা ২০০ টাকা, ৭৯০ টাকার জুতা ৪০০ টাকা এবং ১৯০ টাকার জুতা ১৫০ টাকায বিক্রি করছে তারা।
এছাড়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কেডস বা জুতা কিনতে পারবেন ৪৫০ থেকে ৫০০০ টাকায়। আর নন ব্র্যান্ডের কেডস কিনতে পারবেন ৩০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে। কাপড়ের জুতা ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকায় কেনা যাবে। এ ছাড়া প্লাস্টিক বা চামড়ার দাম পড়বে ২০০০ টাকা।
যেখানে পাবেন জুতা:
রাজধানীর বিভিন্ন শো রুমে কিনতে পারেন আপনার পছন্দের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতা। শো রুমগুলোর মধ্যে বাটা, গ্যালারি অ্যাপেক্স, বে এম্পোরিয়াম, জেনিস, জেইলস সপ, সামপান অন্যতম।
ব্র্যান্ড ছাড়া জুতা কিনতে চাইলে এলিফ্যান্ট রোড, মোস্তফা মার্টসহ বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের বিভিন্ন স্টলে যেতে হবে। এছাড়া আরও পাবেন রাপা প্লাজা, নিউমার্কেট এলাকা, প্রিন্স প্লাজা, পিংক সিটি, মিরপুর, গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, উত্তরা, মতিঝিল, গুলিস্তানসহ নানা স্থানে।
এছাড়া জুতা কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন কুটির শিল্প ও বুটিক্স হাউসগুলোও পোশাকের ডিজাইনের সাথে মিল রেখে তৈরী করেছে বিভিন্ন জুতা।
বিক্রেতার বক্তব্য:
এপেক্সের বঙ্গবন্ধু শাখার ম্যানেজার মো. আবদুল হাকিম খান বলেন, বৈশাখের বেচা-কেনা এখনও শুরু হয়নি পুরোপুরি। তবে সাধারণ বিক্রির চেয়ে খানিকটা বেড়েছে ।
তিনি বলেন, বৈশাখের জুতা কেনার ভিড় বাড়বে নববর্ষের দু-একদিন আগে থেকে। এখন ক্রেতারা পোশাক নিয়েই ব্যস্ত।
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর এপেক্স আউটের বিক্রয় প্রতিনিধি শাহ আলমের কাছে কোন ধরনের জুতা বেশি চলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়েদের ক্ষেত্রে এখন ট্রেন্ড বা ফ্যাশন হলো ফ্ল্যাট স্যান্ডেল এবং দুই ফিতার স্লিপারের চাহিদা বেশি।
শারীরিক উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে কিছু ‘ব্লক হিল’ স্যান্ডেল বিক্রি হচ্ছে। তবে সেটা আগের তুলনায় কম বলে জানান তিনি।
যাত্রাবাড়ীর জেইলস সপ সু শোরুমের বিক্রয় প্রতিনিধি সাইফুল বলেন, নববর্ষের বেচা-বিক্রি তেমন হচ্ছে না। তবে এ বছর ফ্ল্যাট এবং সামান্য এজ হিলের স্যান্ডেলের চাহিদা একটু বেশি।
পাজামা-পাঞ্জাবির সঙ্গে কিশোর-তরুণরা ব্যবহার করেন স্যান্ডেল ও স্লিপার। কোলাপুরি এবং এই ধাঁচের কিছু স্যান্ডেলই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বাজারে শিশুদের জন্য বৈশাখ উপলক্ষে নতুন কালেকশনের পাশাপাশি পুরান মডেলও রয়েছে। এর মধ্যে বাচ্চাদের সু বা স্যান্ডেল সু-ই বেশি।
টি-শার্টের সঙ্গে ম্যাচিং করে রঙিন জুতা আজকাল অনেকেরই পছন্দ। বাদামি-কালোর বাইরে লাল, হলুদ, সবুজ, কমলা, নীল রঙের জুতা অনেকেরই পছন্দ। জুতার নিচের দিকে গোল আকারে এক রং আর ওপরে অন্য রং এমন জুতাও আছে অনেকের পছন্দের তালিকায়।
অনেকে আবার এক রঙের জুতার সঙ্গে ভিন্ন রঙের ফিতা কিনে নেন। কাপড়ের জুতা ছাড়াও কেউ কেউ হালকা ধাঁচের জুতা বেছে নেন। জুতার সেন্ডেলও তরুণরা চান ভিন্ন ঢং। সব মিলিয়ে জুতাটা হতে হবে আরামের, সঙ্গে ফ্যাশনও।
এসএস/এআর