
স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদা হওয়ায় (ডিমিউচুয়ালাইজেশন) সন্তুষ্ট দাতাসংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সুষ্ঠুভাবে এ প্রক্রিয়া শেষ করা ও পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক কাঠামোগত সংস্কারকে বড় ধরণের সাফল্য মনে করছে বাংলাদেশের অন্যতম বড় এই উন্নয়ন-অংশীদার। এসব উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট (এফআরএ) প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে সংস্থার মহাপরিচালক জুয়ান মিরান্ডা এ তাগিদ দিয়েছে। চিঠিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক ফোরাম আইওএসকোতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সদস্য এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হওয়ায় অভিনন্দন জানানো হয়। পাশাপাশি মনে করিয়ে দেওয়া হয়, এখনও তিনটি শর্ত পূরণ হয় নি। তাই দ্রুত এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
উল্লেখ, এডিবি পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও শক্তিশালী করার জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে। প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের জন্য সংস্থাটি ১৫ কোটি ডলার (প্রায় ১২শ কোটি টাকা) সহায়তা দিয়েছিল। সেকেন্ড ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় আরও ১৫ কোটি ডলার দিচ্ছে। অবশ্য ঋণ হিসেবেই দেওয়া হচ্ছে এ অর্থ। তবে এ ঋণ অনেক নমনীয়।
এফআরএসহ বাকী শর্তগুলো পূরণের পর থার্ড ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় নতুন সহায়তা দিতে চায়। অর্থমন্ত্রণালয় ও বিএসইসি যৌথভাবে সরকারি-বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিবিড় আলোচনার মাধ্যমে এ কর্মসূচির সম্ভাব্য রূপরেখা তৈরি এমন আশা প্রকাশ করা হয় চিঠিতে।
উল্লেখ, দাতা সংস্থার বাইরেও অর্থনীতিবিদ, পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টরা দীর্ঘদিন ধরে এফআরএ’র তাগিদ জানিয়ে আসছে। ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার এ বিষয়ে একটি অধ্যাদেশ জারী করলেও আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সেটিকে আইনে রূপ দেয় নি। গত বছর এ আইনের খসড়া তৈরি করা হয়। কিন্তু শেষ মুহুর্তে এসে প্রভাবশালীদের চাপে উদ্যোগে পাথরচাপা দেয় সরকার।
অভিযোগ আছে, পুঁজিবাজারে শেয়ারের মূল্য কারসাজির পেছনে অনেক ক্ষেত্রেই অসাধু উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান। এদের সঙ্গে যোগসাজসে মুনাফা বাড়িয়ে-কমিয়ে, এমনকি লোকসান দেখায় এসব কোম্পানি। কিন্তু এ অপরাধে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুযোগ খুবই কম। এফআরএ হলে তার অধীনে গঠিত হবে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল, যেটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাইসন্স ইস্যু করবে। এছাড়া আইনে থাকবে হিসাবকারসাজির দায়ে জরিমানা ও ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ।