
এ বছর রিহ্যাব মেলায় বেশ জনসমাগম থাকলেও ফ্ল্যাট-প্লট বুকিং ও বিক্রি আশানুরূপ হয়নি। অর্থনৈতিক মন্দা আর রাজনৈতিক অস্থিরতায় এবার মেলায় ভালো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পাঁচ দিনব্যাপী এই মেলা গতকাল শেষ হয়েছে।
মেলায় আগতরা ফ্ল্যাট-প্লট দেখলেও বুকিং বা অর্ডারে খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি কেউ। কোম্পানির নাম-ঠিকানা আর নিজেদের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিয়েই ক্ষান্ত হয়েছেন তারা।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ব্যবসায়িক মন্দার কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে করেন মেলায় অংশগ্রহণকারীরা।
তবে মেলায় আগতরা বলছে, ভিন্ন কথা। ফ্ল্যাট-প্লটের উচ্চমূল্যের কারণে মানুষ আগ্রহ কম দেখাচ্ছে বলে জানালেন তারা।
গতকাল রাজউকের কর্মকর্তাদের অভিযান চলাকালে দেখা গেছে, রাজধানীর বাড্ডা থেকে আশা সায়মা হোসেন ডেভেলপার কোম্পানি ট্রপিকেল হোমসের সামনে দাঁড়িয়ে কর্মকর্তাদের দৃষ্টি কাড়ার জন্য জোরে জোরে বলছে এসব ফ্ল্যাট বা প্লট গরিবের জন্য নয়, বড় লোকের জন্য। দাম অনেক বেশি।
সৌদি প্রবাসী কামরুলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের মেলা হলে সব কোম্পানির ফ্ল্যাট-প্লট সম্পর্কে সহজে জানা যায়। তবে, ফ্ল্যাট-প্লটের দাম আমাদের সামর্থ্যের চেয়ে অনেক বেশি। দাম হাতের নাগালে রাখা উচিত। এতে বেচা-বিক্রি ভালো হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গত বছর ফ্ল্যাট অবিক্রিত রয়ে গিয়েছিল ২২ হাজার ৫৭২টি। যার মূল্য প্রায় ২১ হাজার ৫০৬ কোটি ৩৬ লাখ ৭৫ হাজার ১১১ টাকা। এবার কতগুলো বিক্রি হয়েছে তা পরে জানানো হবে বলে জানালেন রিহ্যাব কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, প্রতি বছরের মতো এবারও অনুমোদনহীন হাউজিং ও ল্যান্ড প্রজেক্টের অনেক ফ্ল্যাট ও প্লটের প্রদর্শন করেছে অনেক কোম্পানি। আর এসব অবৈধ প্রদর্শন ও বিক্রির নিউজ কাভার করতে গিয়ে দুই সংবাদকর্মী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে এবার।
ক্রেতাদের সাড়া কেমন জানতে চাইলে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের মার্কেটিং ইনচার্জ মো. ফরহাদুজ্জামান অর্থসূচককে বলেন, মেলার মধ্য দিয়ে আবাসন ব্যবসায় কয়েক বছর ধরে মন্দাভাব কেটে যাওয়ার আশা করলেও তা পূরণ হয়নি।
বিশেষ ছাড় আর পুরস্কারের ঘোষণা সত্ত্বেও মেলায় ফ্ল্যাট-প্লট বুকিং ও বিক্রি আশানুরূপ হয়নি বলে মনে করেন মদিনা ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ আবদুল্লাহ আল আরিফ। তবে, মানুষের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।
এবারের মেলায় মোট ১৫৫টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রিহ্যাবের ১৪১টি এবং ভবন নির্মাণ সামগ্রীর অংশগ্রহণকারী ও অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান ছিল ১৪টি। তাছাড়া, কো-স্পন্সর হিসেবে ছিল ১১টি প্রতিষ্ঠান।
আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০ মার্চ থেকে এ মেলা শুরু হয়। পাঁচদিনব্যাপী এ মেলা সোমবার রাত নয়টায়ে শেষ হয়েছে।
জেইউ/এএস