
চতুর্থ পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার পরিমাণ ছিল উল্লেখ করার মতো। অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ কার্যক্রমের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সার্বিক প্রক্রিয়া নস্যাৎ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের (ইডব্লিউজি) পরিচালক মো. আবদুল আলীম।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের ‘চতুর্থবারের মতো উপজেলা নির্বাচনের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট পেশ’ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পিরোজপুর সদর উপজেলায় ১৮টি কেন্দ্রে ইডব্লিউজি’র পর্যবেক্ষকদের বের করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে একজন প্রার্থীর সমর্থকরা ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিলে পিটিয়ে তাকে ব্যালট বক্সে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পিরোজপুরের একটি উপজেলায় ৯ থেকে ১০ বছর বয়সী একটি ছেলে ইডব্লিডিজি’র পর্যাবেক্ষকের সামনে ১৩টি ভোট দিয়েছে। আনোয়ারা উপজেলার একটি কেন্দ্র থেকে আমাদের একজন পর্যাবেক্ষককে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এবং সেখানেও ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কলারোয়া উপজেলার একটি ভোটকেন্দ্রে একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ব্যালট পেপার ছিনতাই করে আমাদের পর্যবেক্ষক ও ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার সামনে সিল মারেন। যশোর সদরের দুটি কেন্দ্রে বেলা ২টার দিকে ভোট গ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ভোট গ্রহণ শুরু হলে ভোট দিতে এসে ভোটাররা শোনের তাদের ভোট হয়ে গেছে।
জাতীয় নির্বাচন পর্যাবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমাদের পর্যাবেক্ষণের ধারাবাহিকতার শুরু থেকে গতকালের নির্বাচন পর্যন্ত যা হয়েছে তা আগের সব সহিংসতাকে ছাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, এভাবে নির্বাচন হলে তো মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে না। এ নির্বাচনে যে সকল ঘটনা ঘটেছে তা ইতিহাসে বিরল।
ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রাথমিক রিপোর্টে আরও বলা হয়, আমাদের পর্যবেক্ষণের ২৩টি উপজেলার ১৬টি উপজেলায় ১৮৪টি ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ২৩টি উপজেলার ৯৬টি উপজেলায় ১২২টি ভোটকেন্দ্রের ভেতর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ২৩টি উপজেলার ১৯টি উপজেলায় ভোটাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের ৯২টি ঘটনা ঘটেছে। ২৩টি উপজেলার ১৭টি উপজেলায় ৬৪টি আইন অমান্য করে নির্বাচনী প্রচারণার ঘটনা ঘটেছে। ২৩টি উপজেলার ১১টি উপজেলায় ২৬টি ভোটের কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণার ঘটনা ঘটেছে। ২৩টি উপজেলার ১০টি উপজেলায় পোলিং এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার ৭০টি ঘটনা ঘটেছে। ২৩টি উপজেলার ১০টি উপজেলায় ভোটা কেন্দ্রের ভেতরে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে ১৪টি এবং ২৩টি উপজেলার ১৬টি উপজেলায় ইডব্লিউজি’র পর্যবেক্ষকদের গণনা প্রক্রিয়া দেখতে না দেওয়ার মত ৩৫টি ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, লাইট হাউসের চিফ এক্সিকিউটিভ মো. হারুন অর রশীদ ও বিভন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা।
এসএস/জেইউ