
পুঁজিবাজারে প্রাথমিক গণ প্রস্তাব বা আইপিও’র আবেদন পদ্ধতি সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তৈরী করা হয়েছে নতুন পদ্ধতির খসড়া প্রস্তাবনা। এ পদ্ধতিতে ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে আইপিও’র আবেদন ও টাকা জমা দিতে হবে না। নিজ নিজ ডিপির (ডেপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট) মাধ্যমেই আবেদন করা যাবে।
আগামিকাল মঙ্গলবার বিএসইসির কমিশন বৈঠকে এ পদ্ধতি অনুমোদন পেতে পারে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে পাইলট প্রকল্পের মত সীমিত পরিসরে চালু হবে এটি। এতে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়লে তা সংশোধন করে সব আইপিও’র ক্ষেত্রে পদ্ধতিটি বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হবে।
আগামি এপ্রিল মাসে যদি কোনো আইপিও বিএসইসির অনুমোদন পায়, তাহলে সেটি থেকেই নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়ন শুরু হবে।
খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আইপিও’র শেয়ারের জন্য আবেদন করতে আগ্রহী প্রত্যেক বিনিয়োগকারীকে সংশ্লিষ্ট ডিপিতে নিজ একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা জমা রাখতে হবে। এ টাকা ওই আইপিও’র জন্য ব্লক করে রাখা হবে। আইপিও’র লটারি না হওয়া পর্যন্ত তিনি তা তুলতে তা ওই টাকায় অন্য কোনো শেয়ার কিনতে পারবেন না।
ডিপি তার সব গ্রাহকের আবেদনপত্র জমা দেবে। লটারীতে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী শেয়ার বরাদ্দ পেলে তার হিসাব থেকে কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে টাকা স্থানান্তর করে দেবে ডিপি। অন্যদিকে বিনিয়োগকারী অকৃতকার্য হলে তার গচ্ছিত টাকার উপর থেকে ব্লক তুলে নেওয়া হবে। তখন বিনিয়োগকারী চাইলে ওই টাকায় নতুন কোনো আইপিও’র আবেদন করতে পারবেন, অন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারবেন অথবা চাইলে তা তুলেও নিতে পারবেন।
বর্তমানে কয়েকটি ব্যাংকের নির্ধারিত শাখার মাধ্যমে আইপিও’র আবেদনপত্র ও টাকা জমা নেওয়া হয়। অল্প সংখ্যক ব্যাংক শাখায় আবেদন জমা নেওয়া হয় বলে প্রায় সময়ই দীর্ঘ লাইন লেগে যায়। প্রখর রোদে দাঁড়িয়ে, কখনোবা বৃষ্টিতে ভিজে আবেদনপত্র জমা দিতে হয় সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের। আবার লটারীতে অকৃতকার্য হলে জমাকৃত অর্থ ফেরত পেতেও (রিফান্ড) ঝক্কি পো্হাতে হয়। নতুন প্রক্রিয়া চালু হলে এ দুর্ভোগ ও ঝক্কি-ঝামেলা থেকে রেহাই পাবেন বিনিয়োগকারীরা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির কমিশনার মো: আরিফ খান বলেন, গত বছরের শেষভাগে আমরা আইপিও প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্যাগ নিই। যাতে বিনিয়োগকারীদের দুর্ভোগ কমে আসে। তাছাড়া বর্তমান পদ্ধতিতে প্রক্রিয়া শেষ করতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে। আইপিওতে অনেক টাকা আটকে থাকে বলে অনেক সময় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। নতুন পদ্ধতিতে এর অবসান হবে। ফলে আরও বেশি সংখ্যক আইপিও অনুমোদন দেওয়া যাবে, যা বাজার গভীরতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
এ বিষয়ে গত বছরের নভেম্বর মাসে প্রথম সংবাদ প্রকাশ করেছিল অর্থসূচক। সংবাদটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন-