
আগামি লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি’র (বিজেপি) প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর উত্থানকে হিটলারের সাথে তুলনা করেছেন ভারতের প্রবীণ রাজনীতিক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সম্প্রতি প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মোদীর প্রার্থিতা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
প্রায় ৭০ বছর বয়স্ক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই) পলিটব্যুরোর সদস্য। তিনি ২০০০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পিটিআইকে প্রদত্ত সাক্ষাৎকারে ভারতের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতের রাজনীতি নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
বুদ্ধদেব বসুর মতে, মোদীর উত্থান আধুনিক ভারতের জন্য খুবই নেতিবাচক। তার মতে, ভারতীয় কতিপয় ব্যবসায় গোষ্ঠী এবং মৌলবাদী দলগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা মোদীর সাহেবের প্রার্থীতাকে অতিরঞ্জিত করে প্রচার করছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জরিপে প্রাপ্ত ফলাফল বস্তুনিষ্ঠ নয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
গুজরাটের দাঙ্গার সময় প্রদেশটির মূখ্যমন্ত্রী মোদীর রহস্যজনক ভূমিকা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করেছেন বুদ্ধদেব।
তিনি বলেন, ১৯৩৩ সালেও হিটলার জার্মানিতে নির্বাচনে জিতেছিল। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, হিটলারের নীতি ঠিক ছিল।
বুদ্ধদেব জানান, কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়ই ভারতকে ধনী-গরিব দুইভাগে বিভক্ত করেছে। তিনি জানান, বিজেপিকে ঠেকাতেই ২০০৪ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল সিপিআই(এম)। তিনি চান না, এবারও সেই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক, যেন কংগ্রেসের ব্যর্থ নীতিতে সমর্থন দিতে বাধ্য হতে না হয়। তবে কংগ্রেসের ভাবী নেতা রাহুল গান্ধী সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
বুদ্ধদেব তার রাজ্য প্রতিদ্বন্ধী তৃণমূল নেত্রী মমতার সাথে জোট বাধার কথা গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, সবাই জানে তার নীতি কিভাবে কাজ করে।
তবে তিনি জানান, কংগ্রেস-বিজেপি’র সমর্থন সব মিলিয়ে ৪৬-৪৭ শতাংশ। তাই বাকি রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে কিছু একটা ঘটানো মোটেও অসম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১ জুন পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ লোকসভার ১৫তম আসরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই গত ৫ মার্চ ১৬তম লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ভারতীয় নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের সূত্র অনুযায়ী, ৫৪৩টি লোকসভা আসনে প্রার্থী নির্বাচনে প্রায় ৮১ কোটি ৪০ লাখ ভারতীয় নাগরিক তাদের মতামত প্রদান করবেন। এই উদ্দেশ্যে ৭ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত নয় দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ফলাফল গণণা এবং ঘোষণা করা হবে শুধুমাত্র ১৬ মে।