দাম বেড়ে পর্বত চূড়ায়, বিনিয়োগ ফিরে পেতে লাগবে ১০০ বছর

দেশ গার্মেন্টস, desh garments

দেশ গার্মেন্টস,  desh garmentsবস্ত্র খাতের কোম্পানি দেশ গার্মেন্টসের শেয়ার দিন দিন অতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। মন্দা বাজারেও এ শেয়ারের দর বাড়ছে। গত এক মাসে এ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৪ শতাংশ।

শেয়ারের দামের বিপরীতে আয় না বাড়ায় শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাতও (পিই রেশিও) বাড়ছে। রোববার লেনদেন শেষে এই শেয়ারের পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ১০০ দশমিক ৭৬। অর্থাৎ আয়ের তুলনায় দেশ গার্মেন্টসের শেয়ারের দাম প্রায় ১০০ গুণ। কোম্পানিটি যদি তার আয়ের পুরোটা লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করে, তাহলেও একজন বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত পেতে ১০০ বছর লাগবে।

মূল্য-আয় বা পিই রেশিও’র মাধ্যমে একটি শেয়ারের দাম তার আয়ের কতগুণ তা প্রকাশ করা হয়। শেয়ারের বাজার মূল্যকে তার আয় দিয়ে ভাগ করলে পিই রেশিও পাওয়া যায়। সাধারণভাবে মনে করা হয়, পিই রেশিও ১৫ বা এর কম হলে সে শেয়ার তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ। পিই রেশিও বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগ ঝুঁকিও বাড়তে থাকে। বর্ধনশীল কোম্পানি না হলে পিই রেশিও ২৫ ছাড়িয়ে যাওয়া মানে ওই শেয়ার অতি বিপজ্জনক হয়ে উঠা।

রোববার দেশ গার্মেন্টসের শেয়ারের দাম ১০ টাকা ৮ পয়সা বা ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ দর বেড়ে ১১৮ টাকা ৯০ পয়সায় উঠে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এ শেয়ারের দাম ছিল ৮২ টাকা। অর্থাৎ এক মাসে শেয়ারটির দাম বেড়েছে ৩৬ টাকা।

দেশ গার্মেন্টসের পরিশোধিত মূলধন ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। রিজার্ভ রয়েছে মাত্র ৭৪ লাখ টাকা। গত ১২ বছরে এটি কখনো ৭ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দেয় নি। ২০১৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করে ৮৮ পয়সা। সে বছর কোম্পানিটি ৭ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়।

চলতি বছর প্রথম দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছে ৫৯ পয়সা। একই হারে বাকী ছয় মাস আয় হলে বছর শেষে ইপিএস দাঁড়াবে ১ টাকা ১৮ পয়সা। এই ইপিএস বিবেচনায় নিলে পিই রেশিও দাঁড়ায় ১০০ দশমিক ৭৬। আর গত বছরের ইপিএস (৮৮ পয়সা) বিবেচনায় নিলে পিই রেশিও দাঁড়ায় ১৩৫।

রোববার মূল্য বৃদ্ধিতে শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকায় উঠে আসে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, রেইনউক যজ্ঞেস্বর, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, আলহাজ্ব টেক্সটাইল, এ্যাটলাস বাংলাদেশ, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস লিমিটেড, লিবরা ইনফিউশন, হাক্কানি পাল্প এবং প্রাইম টেক্সটাইল।

বিশ্লেষকদের মতে, মন্দা বাজারে তারল্য কম থাকে বলে বড় মূলধনের কোম্পানির শেয়ার কেনা-বেচা কম হয়। এ সময়ে কারসাজিকারীরা অনেক বেশি সক্রিয় হয় উঠে। তারা তুলনামূলক কম মূলধনের কোম্পানিগুলোকে টার্গেট করে। সরবরাহ কম বলে এসব কোম্পানির স্বল্প সংখ্যক শেয়ার কিনলেই দাম অনেক বেড়ে যায়। নতুন বিনিয়োগকারীরা না বুঝে প্রলুব্ধ হয়। তখন তাদের কাছে এসব শেয়ার গছিয়ে দেওয়া হয়। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের এ বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

 এসএ/