বৈদেশিক অনুদানের দুই-তৃতীয়াংশই লুণ্ঠন করেছে রাজনীতিবীদরা: আবুল বারকাত

  • শরিফ মাহমুদ
  • March 22, 2014
  • Comments Off on বৈদেশিক অনুদানের দুই-তৃতীয়াংশই লুণ্ঠন করেছে রাজনীতিবীদরা: আবুল বারকাত

DU_cenetবিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত অভিযোগ করে বলেছেন, গত চল্লিশ বছরে সরকারিভাবে প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকার বৈদেশিক ঋণ-অনুদান এসেছে। এ অনুদানের দুই-তৃতীয়াংশ লুন্ঠন করেছে অর্থনীতি ও রাজনীতিবীদরা।

‘ বাংলাদেশের দারিদ্য- বৈষম্য- অসমতা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। ঢাকা স্কুল অব ইকনোমিকসের পরিচালক ড. কাজী খলীকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। নির্ধারিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, অধ্যাপক ড. মো: মোয়াজ্জেম হোসেন খান।

আবুল বারকাত বলেন, দেশে রেন্ট সিকারদের সাথে সরকারের যোগসূত্র রয়েছে। রেন্ট সিকাররা অন্যের সম্পদ গ্রহণ, অধিগ্রহণ, হরণ, দখল, বেদখল, জবরদখল, আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে থাকে। আর এই অনৈতিক কর্মকাণ্ড সহায়তা করছে সরকার ও দেশের রাজনীতি।

তিনি বলেন, সরকার ও রাজনীতি রেন্ট সিকারদের অধিনস্থ। রেন্ট সিকিং প্রক্রিয়ার কারনে দেশে বৈষম্য-অসমতা হৃাস পায়নি, বরং বেড়েছে। আর এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক উগ্রতাসহ বিভিন্ন মৌলবাদের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক বিকাশ লাভ করেছে। রেন্ট সিকারদের সাথে রাজনীতি ও সরকারের অশুভ স্বার্থ সম্মিলনের ফলে দেশে শ্রেণী কাঠামোর পরিবর্তন ঘটেছে।

তিনি বলেন, দেশে দারিদ্র হৃাস পায়নি। দারিদ্র আরও বেড়েছে। ৩০বছর আগে ৭০ভাগ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করলেও দারিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল ৩কোটি। ২০১০সালে সরকারি হিসাবে ৩২ভাগ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করলেও দেশে দারিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫কোটি। তিনি বলেন, এই বিবেচনায় দেশে দারিদ্র মানুষের সংখ্যা ৮৩ভাগ।

বারকাত বলেন, এই কাঠামো চলতে থাকলে দেশে দারিদ্র-বৈষম্য-অসমতা কখনোই দূর হবে না। এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে হলে রেন্ট সিকারদের সরকার ও রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।

তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী রাজনীতি কোনো দূর্বল প্রতিপক্ষ নয় তারা ইসলামের মূলমন্ত্র পরিত্যাগ করে ‘অর্থনৈতিক ক্ষমতাভিত্তিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে’ রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। তারা ধর্মকে বর্ম হিসেবে বেছে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ  ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দেশ রেন্ট সিকারদের কবলে পড়েছে। এই রেন্ট সিকারদের দেশ থেকে দূর করতে হবে। এদের সংখ্যা ৫শতাংশের বেশি নয়। তিনি বলেন, ইচ্ছা থাকলেই এটা করা সম্ভব হবে।

এএইচ/ঢাবি প্রতিনিধি