
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বৃহস্পতিবার রাতে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে তালেবান হামলায় দুই বাংলাদেশিসহ নয়জন নিহত হয়েছে। নিহত দুই বাংলাদেশির মধ্যে একজন হলেন ওয়াসিম জামান নামের এক এনজিও কর্মকর্তা। তিনি মালয়েশিয়া ভিত্তিক এক এনজিওতে কর্মরত ছিলেন। অন্য জনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। নিহতদের মধ্য বিদেশি ছাড়াও এএফপিতে কর্মরত একজন সাংবাদিক রয়েছেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে চার বন্দুকধারী কাবুলের সেরেনা হোটেলে অনুপ্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। তিন ঘন্টাব্যাপী চলমান এই হত্যাযজ্ঞে ঘটনাস্থলেই ওয়াসিমসহ নয়জন নিহত হয়। তবে অন্যদের পরিচয় সম্পর্কে এখনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীকালে আফগানিস্তানের এলিট বাহিনী আফগান ক্রাইসিস রেসপন্স ইউনিট হোটেলটি ঘিরে ফেলে বন্দুকদারিদের হত্যা করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় আসে। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিক ছাড়াও দুইজন কানাডার এবং একজন প্যারাগুয়ের নাগরিক রয়েছেন।
নিহত জামান ইউএনএফপিএ এর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন শেষে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব ম্যানেজমেন্ট পপুলেশন প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি পাকিস্তান শাসনামলের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াহিদুজ্জামানের ছেলে। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি থানার সীতারামপুর গ্রামে। কাবুলে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, জামান অভিবাসন সূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন।
এএফপি জানিয়েছে, নিহত সাংবাদিকের নাম সদর আহমেদ। এই হামলায় সদরের দুই মেয়ে এবং স্ত্রীও নিহত হয়েছেন। তার ছেলেকে আশংকাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, নিহতদের অধিকাংশই আগামি ৫ এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্য ওই হোটেলে অবস্থান করছিলেন। আফগান সরকারের বাসভবন থেকে এক কিলেমাটারের কম দূরত্বে অবস্থিত এই হোটেলে হামলা চলাকালে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মরত ব্যাক্তিরা অবস্থান করছিলেন।
এদিকে হামলার পরপরই দায় স্বীকার করেছে তালেবান। সংগঠনটি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে এই হামলা চালো হয়েছে। জঙ্গি সংগঠনটির মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আমরা যা সিদ্ধান্ত নিই, তাই বাস্তবায়ন করে ছাড়ি।