
১৯১২ সালে প্রথম সমুদ্র যাত্রায় বিশ্ববিখ্যাত টাইটানিক জাহাজের সমুদ্র-সমাধির নেপথ্যে আসলে কী ঘটেছিল তা সেলুলয়েড ফিতার মাধ্যমে রূপালি পর্দায় বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছেন জেমস ক্যামেরুন। যেখানে মানুষের বাঁচার আর্তনাদ, প্রেম ও প্রিয়জন বিয়োগ, লোমহর্ষণ, নাটকীয় উত্তেজনা প্রভৃতিকে সিনেমার মূল উপাদান হিসেবে গ্রহণ করেছেন তিনি।
পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনা ঘটে যা অবিশ্বাস্য, কাকতালীয় ও অতিপ্রাকৃত হিসেবে বর্ণনা করা হয়। বিজ্ঞান বা যুক্তিবিদ্যা এক্ষেত্রে অসহায় বা নিরুপায় হয়ে পড়ে।
কয়েক হাজার বছর আগে মিশরীয় রাজা-রাণীকে চিরস্মরণীয় ও মৃত্যুর পর আত্মা পুনরুজ্জীবিত হয়ে পুনরায় দেহে ফিরে আসবে এই বিশ্বাস নিয়ে মৃত্যুর পর তাদের দেহকে মমি করে রেখে দেওয়া হতো। ইতিহাসে তারা ফারাও বা ফেরাউন নামে পরিচিত। মিশরীয়দের এই বিশ্বাস ও মমিকে কেন্দ্র করে সেসময়ে গড়ে উঠেছিল ঐতিহাসিক পিরামিড যা আজও মানুষের হাজারো বিষ্ময় নিয়ে পৃথিবীতে টিকে আছে। মমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিষ্ময়, বিশ্বাস আর অনেক কাকতালীয় লোমহর্ষক ঘটনা।
খ্রিস্টপূর্ব একাদশ শতকে মিশরে আমেনরা নামে এক রাজ কুমারী মারা যান। যথানিয়মে তাকে মমি করে সমাধিস্থ করা হয়। প্রায় তিন হাজার বছর পর ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে তার মমিটি কেনার জন্য চারজন ইংরেজ বণিক মিশরে আসেন এবং তারা রাজকুমারী আমেনরার মমিটি ক্রয় করেন।
কিন্তু ইংরেজ এই বণিকদের নানা দুর্ভোগ আর দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়ায় আমেনরার মমিটি। মমিটি কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় চারজনের মধ্যে একজন মরুঝর সাইমুমের কবলে পড়ে মারা যান।
একজন লন্ডনে ফিরে দেখেন তার সকল সম্পত্তি বেদখল হয়ে গেছে। ভীষণ অসুস্থ হয়ে চাকরিচ্যুত হন আরেকজন।
এরপর মমিটি বৃটিশ মিউজিয়ামে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু মমিটিকে স্পর্শ করা প্রত্যেক দর্শনার্থীই পড়েছেন মারাত্মক দুর্ভোগে। এমন কি এক দর্শনার্থী কাপড় দিয়ে মমিটির মুখ পরিষ্কার করার পর এক সপ্তাহের মধ্যে তার ছেলে মারা যায়।
আর একবার এক ফটো সাংবাদিক মমিটির ছবি তুলেছিলেন। ছবিটি ডেভেলপ করে তিনি দেখেন রাজকুমারীর মুখের বদলে এক বীভৎস ও বিকৃত মুখ। সে রাতেই তিনি আত্মহত্যা করেন।
এসব ঘটনার পর মমির প্রদর্শন বন্ধ করে দেয় মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ এবং এটি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পরের দিনই কর্মকর্তারা দেখেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার লাশ পড়ে আছে টেবিলের ওপর।
এসবের পরেও থেমে যায়নি মানুষের আগ্রহ। কয়েকমাস পর এক মার্কিন পর্যটক মমিটি ক্রয় করে স্বদেশে ফেরার জন্য নিউইয়র্কগামী একটি জাহাজের কেবিন ভাড়া নেন। এই জাহাজটিই ছিল বিশ্বখ্যাত সেই টাইটানিক।
১৯২২ সালের ২৬ নভেম্বর, প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড আবিষ্কার করেন ধনরত্ন ও মণিমুক্তা খচিত ফারাও তুতেন খামেনের কফিন। এর অর্থজোগানদাতা ছিলেন জন কর্নারভান।
পাঁচ মাস পর তুতেন খামেনের মমি ও গুপ্তধন আবিষ্কারের অর্থদাতা কর্নারভানের মৃত্যু হয়। কিভাবে বা কেন কর্নারভানের মৃত্যু হয় তা নির্ণয় করতে পারেননি ডাক্তাররাও। তবে ৭০ বছর বয়সে স্বাভাবিক মৃত্যু হয় মূল আবিষ্কারক হাওয়ার্ডের।