
হালআমলে সবচেয়ে মারাত্মক রোগ হিসেবে ক্যান্সারের অবস্থান সবার উপরেই। এখনও সেভাবে কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থাও হয়নি রোগটির।ফলে রোগটি এখনও রোগী থেকে শুরু করে চিকিৎসক সকলের কাছেই বিস্ময়। ধারণা করা হতো আধুনিক কালের জীবন যাপনের ধরণ, খাবারের অভ্যাস, চারপাশের দূষণই রোগটির জন্য দায়ি। তবে সম্প্রতি দেখা গেল হাজারো বছর আগে যখন এমন দূষণ ছিলো না, খাবারে ছিলো না ভেজাল তখনও মানুষের শরীরে বাসা বেঁধেছিলো এই রোগ।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সুদানের গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন তেমন একটি নমুনা। দেশটির ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির শিক্ষার্থীরা মেটাস্টেটিক ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রায় তিন হাজার বছরের পুরনো একজন মানুষের কঙ্কাল আবিষ্কার করেছেন।
আবিষ্কারকরা জানিয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে পুরনো মেটাস্টেটিক ক্যান্সারের রেকর্ড।
সম্প্রতি সায়েন্স ডেইলির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, কঙ্কালটি ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সের একজন যুবকের। রাজধানী খার্তুম থেকে ৭৫০ কিলোমিটার দূরে সুদানের উত্তরাঞ্চল থেকে এটি উদ্ধার করেন গবেষকরা। ২০১৩ সালে আধুনিক সুদানের এক সমাধিস্থল থেকে উদ্ধার করেন বলে জানান তারা।
প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানান, খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ সালের এ কঙ্কালটিতে তারা কারসিনোমা ক্যান্সারের প্রমাণ পেয়েছেন। যেটি শরীরের এক প্রান্তে শুরু হলে অন্য প্রান্তে দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। একই সাথে এটি শরীরের নরম কোষগুলোকেও ধ্বংস করে দেয়।
ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং বৃটিশ মিউজিয়ামের গবেষকরা বলেছেন, এ আবিষ্কার তাদেরকে প্রাচীন জনগোষ্ঠীর ক্যান্সারের কারণ জানতে সাহায্য করবে। সেই সাথে এটি পুরনো ক্যান্সারের মূল্যায়ণেও এক নতুন পথের সন্ধান দেবে।
তবে গবেষকদের গবেষণায় এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, ক্যান্সার শুধু এখন আর বর্তমানের রোগ নয় বরং এটি প্রচীন কাল থেকেই আছে। শুধু পার্থক্য একটাই আধুনিককালে ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষ একটু দেরিতে মারা যায়।
ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পিএইচডির ছাত্রী মাইকেল বিনডার কঙ্কালটি পরীক্ষা করে বলেন, প্রাচীন জনগোষ্ঠীর ক্যান্সারের বিবর্তন ও প্রাচীনত্ব সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানে। তবে কঙ্কালের ছোট ছোট অংশগুলোই ক্যান্সারের চিহ্ন বহন করে। আর এটিই আমাদের আধুনিক ক্যান্সারের বিবর্তন ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে সাহায্য করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্লেষণে এটাই প্রমাণিত হয়েছে, হাড়ে যে ক্ষত আছে তা কেবল নরম টিস্যু ক্যান্সারের মাধ্যমে হওয়া সম্ভব।
ষত আছে তা কেবল নরম টিস্যু ক্যান্সারের মাধ্যমে হওয়া সম্ভব।