
গত ৫ বছরে যুক্তরাজ্যে দরিদ্রের হার কমেছে ১.৭ শতাংশ। সম্প্রতি ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নামক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের এক গবেষণায় এ তথ্য তুলে ধরেছে। গবেষণাটি বলছে ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যে যেখানে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ দরিদ্র মানুষ খেতে পারতেন না, সেখানে ২০১২ সালে এসে তাদের সংখ্যা নেমে এসেছে ৮ দশমিক ১ শতাংশে।
বুধবার ডেইলিমেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, একসময় মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছিল যুক্তরাজ্য। একদিকে দরিদ্র শ্রেণির লোকজন না খেয়ে তাদের জীবন অতিবাহিত করে, অন্যদিকে ধনী ও পুঁজিপতিশ্রেণির মানুষেরা খাদ্য অপচয় করে তা ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে। ফলে দিনদিন বাড়তে থাকে যুক্তরাজ্যে দরিদ্রদের সংখ্যা। আর সেই সব দরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা দিতে সরকারি প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা হয় ফুড ব্যাংক। বর্তমানে ফুড ব্যাংকের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে দরিদ্রের সংখ্যা গত ৫ বছরে অনেক কমে এসেছে বলে দাবি গবেষকদের ।
এদিকে ২০১৪ সালে গ্যালাফের এক গবেষণায় বলা হয়, ৩৪টি উন্নত দেশের মধ্যে যুক্তরাজ্যে দরিদ্রের হার ৮ দশমিক ১ শতাংশের কম। অন্যদিকে ইইউয়ের গবেষণায় ১১ দশমিক ৫ শতাংশ ও ওইসিডির গবেষণায় এই দরিদ্রের হার ১৩ দশমিক ২ শতাংশ।
এছাড়া প্রতিবেশী রাষ্ট্র ফ্রান্সে এই হার ১০ শতাংশ, আয়ারল্যান্ডে ৯ শতাংশ, স্পেনে ১২ শতাংশ, ইতালিতে ১৩ শতাংশ এবং গ্রিসে ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে ইউরোপে এই হার ৩১ শতাংশ যা সবচেয়ে বেশি বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে।
সরকারি এক সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাজ্যে একদিকে যেমন বেড়ে গেছে ফুড ব্যাংকের সংখ্যা তেমনি বেড়েছে ফুট ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকসংখ্যা। তাদের দাবি, ৫ লাখেরও বেশি মানুষ এই ফুট ব্যাংক থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে থাকে। আর দিন দিন এই সংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছে সূত্রটি। তারা বলছে, এতে করে ব্যাংকগুলোতে খাদ্যর চাহিদাও বেড়ে যাচ্ছে।
এদিকে গত সপ্তাহে সমাজকল্যাণমন্ত্রী লর্ড ফ্রেড জানান, দিন দিন যেভাবে গ্রাহকসংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে, সেই হিসেবে আসলেই যাদের উদ্দেশ্যে এই ফুড ব্যাংক তৈরী, তারা খুব বেশি উপকৃত হচ্ছে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। তিনি ফুড ব্যাংকগুলো টিকিয়ে রাখতে এর স্বাভাবিক ব্যবহার নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা দিতে ফুড ব্যাংক একটি ভালো পরিকল্পনা। দরিদ্রের সংখ্যার কমাতে এটি যেভাবে অবদান রাখছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে যুক্তরাজ্যে দরিদ্রের হার একেবারেই শূন্যের কোটায় আনা সম্ভব হবে মনে করেন তারা।
এস রহমান/এআর