
ভ্রমণ যাঁদের নেশা, তাঁদের জন্য প্রস্তুতি পর্বটাও কম ঝক্কির নয়। বাইরে গেলে প্রয়োজনীয় কত কিছুই না দরকার। যেখানেই যাই না কেন, ভ্রমণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গটি হলো ব্যাগ। ভ্রমণগাড়ির সঙ্গে ভ্রমণসঙ্গী ট্র্যাভেল ব্যাগটি যদি সুবিধাজনক না হয়, তা হলে মেজাজটাই বিগড়ে যেতে পারে। তাই ব্যাগের ব্যাপারে দরকার একটু বাড়তি সচেতনতা।
ভ্রমণের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো প্যাকিং-প্রসেস। এ ক্ষেত্রে সঠিক ব্যাগ নিবার্চন করতে পরিচয় দিতে হবে খানিকটা বুদ্ধিমত্তার। যেমন, কোথায় যাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পরিমাণ কেমন হতে পারে। আর এজন্য কী ধরনের ব্যাগ নিলে ভালো সেটাও বুঝতে হবে। অযথা বড় ব্যাগ নিয়ে গেলে পোহাতে হতে পারে বিভিন্ন ধরনের ঝক্কি-ঝামেলা। অনেক সময় বড় ব্যাগ বহন করাটাও ঝামেলা হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং সব থেকে ভালো হলো সহজে বহন করা যায় এমন ধরনের ব্যাগ সাথে নেওয়া।
বেশি দিনের জন্য বেড়াতে গেলে সাধারণ ট্র্যাভেল ব্যাগের চেয়ে বড় ট্রলি ব্যাগই ভালো। ট্র্যাভেল ব্যাগ হিসেবে ট্রলি ব্যাগের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এগুলোর লম্বা হাতল ধরে সহজেই চাকা দিয়ে গড়িয়ে নিয়ে চলা যায়। তাই এ ব্যাগগুলোই সবার প্রথম পছন্দ। এ ছাড়া রয়েছে কাঁধে ঝোলানোর বড় ব্যাগ। এই ব্যাগগুলো ফ্যাশনেবল বলে তরুণ প্রজন্মের কাছেও বেশ প্রিয়। কাঁধে ঝোলানোর ব্যাগগুলো ল্যাপটপ নেওয়ার জন্যও ব্যবহার করতে পারেন স্বাচ্ছন্দে।
বৃষ্টি কিংবা পানি থেকে সাধের পোশাক-আশাক আর দরকারি জিনিস বাঁচাতে কেনার সময়ই দেখে নিন ব্যাগটি পানিরোধক কিনা। এ ক্ষেত্রে ব্যাগের কাপড়টা একটু দেখে কিনতে হবে। কমফোর্ট বা প্যারাস্যুট কাপড়গুলো বেশ ভালো। কিনতে পারেন জিনস, ম্যাক্স, লিনেন কিংবা লেদারের ব্যাগও। ব্যাগের চেইনগুলোও একটু দেখে নেওয়া ভালো। সাধারণত একটু মোটা ধরনের চেইন বেশি টেকসই হয়।
অনেক সময় ট্র্যাভেল ব্যাগের, বিশেষ করে ট্রলি ব্যাগের, চাকা অল্প দিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। স্টিলের চাকা তুলনামূলকভাবে বেশি মজবুত। আর যেসব চাকা ব্যাগের সঙ্গে সরাসরি থাকে, সেগুলোর স্থায়িত্ব বেশি। এ ছাড়া রয়েছে ব্যাগের হাতল। সাধারণ ট্র্যাভেল ব্যাগের হাতল শক্ত কাপড় বা জিনসের কাপড়ের হয়। সে ক্ষেত্রে সেলাইটা একটু দেখে নেওয়া ভালো। তবে হাতল ব্যবহারের সময় প্রয়োজন একটু বাড়তি সতর্কতা, নয়তো কিছুদিন ব্যবহারের পরই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ব্যাগের রঙ, আকার, আকৃতি— সবকিছুই বহন করে আপনার ব্যক্তিত্বের পরিচয়। ফ্যাশন সচেতন অনেকেই ব্যাগের রঙের ব্যাপারে একটু খুঁতখুঁতে। লাল, কালো, নেভি ব্লু, বাদামি, মেরুন, জলপাই, চকলেট— হরেক রঙের ব্যাগ আছে। তাই রুচি ও ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী পছন্দের ব্যাগ কিনে ফেলতে পারেন সহজেই। আর প্রয়োজন অনুযায়ী নির্বাচন করে নিতে পারেন ব্যাগের আকারও। কিছু ব্যাগ চেইনের সাহায্যে ছোট-বড় করা যায়। চাইলে কিনতে পারেন এ ধরনের ব্যাগও।
সাধারণ ট্র্যাভেল ব্যাগের মধ্যে হাইস্যান, প্রেসিডেন্ট, ইকোলাক, ম্যাক্স, ম্যাক ব্র্যান্ড বেশ চলনসই। দেশি ব্র্যান্ডের মধ্যে ভালো পোলো, নেয়াগেরা প্রভৃতি। এ ব্যাগগুলো পাবেন ৫০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। এ ছাড়া দেশি কিছু ব্যাগ পাবেন আরও কমে। ট্রলি ব্যাগের মধ্যে ফ্যান্টাসিয়া, লিবিস্টিং, স্প্রিন্ট, প্রেসিডেন্ট, ম্যাক্স, ম্যাক, ইকুলার ব্র্যান্ড পাবেন এক হাজার ৮০০ থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে। দেশি ব্র্যান্ড পোলো পাবেন এক থেকে দেড় হাজার টাকার মধ্যে। এ ছাড়া রয়েছে রক্সি, পলেস্টার, লিভাইসের মতো ব্র্যান্ডের ব্যাগ। বাজেট বেশি থাকলে কিনতে পারেন স্যামসোনায়ের ব্যাগ। পাবেন ঢাকার গুলশানের ডিসিসি মার্কেট কিংবা বসুন্ধরা সিটিতে; দাম পড়বে আকার অনুযায়ী আট থেকে ৩০ হাজার টাকা।
এ ছাড়া কাঁধের ব্যাগগুলোর মধ্যে ডেসিডোনাল, চেরি মাউন্টেন, পাওয়ার, সেন্টিগাল, অপটিক মার্টিন, জেব্রার ব্যাগ বাজারে সহজলভ্য। এগুলো পাবেন ৬৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে। বিদেশি চামড়ার ব্যাগ পাবেন ইস্টার্ন প্লাজা, গুলশান ডিসিসি মার্কেট কিংবা বসুন্ধরা সিটিতে। দেশি চামড়ার ব্যাগ পাবেন নিউমার্কেট কিংবা আজিজ সুপার মার্কেটের পাশের দোকানগুলোয়।