
বিত্তশালী বাবা আর মমতাময়ী মা থাকলেও আজকাল আমাদের সমাজে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ুয়া কিশোর কিশোরীরা বখে যাচ্ছে। তাদের আচরণের সাথে এই সমাজের বাস্তবতার রয়েছে ব্যবধান ও বৈষম্য। তাদের চিন্তা চেতনায় যে সমাজটা থাকে বাস্তবের সমাজটা আসলে তা নয়।
তারা ভাবেন এ সমাজে বেঁচে থাকা, জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়া কঠিন কোনো বিষয় নয়। পাঠ্যপুস্তক পড়ে এসব ছেলে-মেয়েরা সমাজ ও জীবন সম্পর্কে যতটুকু জানে তা পর্যাপ্ত নয়। কারণ, তারা সমাজকে দেখে তাদের মতো করে; যেখানে তাদের অজান্তেই রয়ে যায় ব্যবধান আর বৈষম্য।
সব বাবা-মা চায় সন্তান তাদের অনুগত হবে। জীবনের মূল্যবোধ সম্পর্কে জানবে, কিন্তু বিত্তশালী বাবার এসব সন্তানেরা বেশির ভাগই হয়ে যায় বাবা মায়ের অবাধ্য। সাধারণ মানুষের কঠিন জীবন সংগ্রাম, অভাব, সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়া, বঞ্চনা, হতাশা আবার এসবের মধ্যেই টিকে থাকা যে কী তারা জানেই না কিংবা বোধেও আসে না।
আমাদের সমাজ-অর্থনীতি যত দ্রুত এগোচ্ছে, সমাজের শ্রেণি ব্যবধান ও বৈষম্য যেন ততই তীব্র হয়ে উঠছে। ফলে সমাজে বাড়ছে ক্ষত, সমাজের এই বৈষম্য একটু ভিন্নরূপে তুলে ধরতেই এবং সমাজ বঞ্চিত মানুষগুলোকে বুঝতে শেখাতে একটি কিশোরের গল্প নিয়ে জার্মান প্রবাসী চলচ্চিত্র পরিচালক এ্যাডাম দৌলা নির্মান করেছেন বৈষম্য চলচ্চিত্রটি। বাংলা ছবির গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে আসা চলচ্চিত্রটি একটি বার্তা দিতে চায়। তা হলো সমাজকে জানা, সমাজের বৈষম্য, ব্যবধান জানা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় রাজধানীর বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্ল্যাক্সে হয়ে গেল চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার শো। এছাড়া ২১ মার্চ রাজধানীর চারটি হলে একযোগে প্রদর্শিত হবে বৈষম্য।
ছবিবোদ্ধারা অনেকেই এটিকে আর্টফিল্ম বললেও ভিন্নমত জানালেন পরিচালক। তার মতে এটি আর্টফিল্মের মোড়কে মূলত একটি বাণিজ্যিক ছবি। এর কাহিনীতে টানটান উত্তেজনা রয়েছে, সংলাপ উপভোগ্য। দুটি গান, নাচ, ফাইটিং দৃশ্যের সমন্বয়ে করা চলচ্চিত্রটিতে দেওয়া হয়েছে একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের সব উপাদান।
ছবিটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ১৪ বছরের কিশোর আবীর হোসেন অংকন। এছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিতা চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন রনি ও পরিচালক এ্যাডাম দৌলা।
জেইমি নামে ১৪ বছরর কিশোরের চরিত্রে অভিনয় করা অংকনের অভিনয়ে দর্শকদের চোখে জল এনে দিতে পারে। এছাড়া ছবিতে পরিচালক আমাদের সমাজটাকে যেভাবে তুলে ধরেছেন তাতে দর্শকদের মনে আসবে দুঃখ আর বেদনা।
‘বৈষম্য’ প্রযোজনা করেছেন কীর্তনখোলা প্রোডাকশন। এটি পরিবেশন করছে ওয়ান স্টোন ফিল্মস।
পরিচালক এ্যাডাম দৌলা জানান, তিনি নতুন প্রজন্মের কাছে সমাজের সমৃদ্ধি ও বঞ্চনার দুটি দিক ও আমাদের মূল্যবোধ এসব তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
তাই সিনেমাটি দর্শকেদের ভালো লাগবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ছবির গল্প ও সমাজকে দেওয়া বার্তা চলচ্চিত্রটিকে অনেক দূর পর্যন্ত নিয়ে যাবে।
শিশু-কিশোর চলচ্চিত্র ও বাংলা ছবির এই আকালের সময়ে বৈষম্য একটি সাহসী প্রচেষ্টা। দেশের প্রথম ও একমাত্র ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ক অনলাইন অর্থসূচক বৈষম্যের অন্যতম মিডিয়া পার্টনার। এছাড়া অন্যান্য পার্টনারদের মধ্যে রয়েছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন, দ্য ডেইলি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও সমকাল।
এমআর/কেএফ