পাসপোর্টের যাবতীয় বিষয়

Pasportআজকাল জরুরি কোনো কাজে কিংবা বেড়াতে দেশের বাইরে যাচ্ছে অনেকে। কিন্তু দেশের বাইরে যাওয়ার সময় পাসপোর্ট কিংবা ভিসা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় অনেককেই। তাই বেড়াতে যাওয়ার আগে পাসপোর্টের বিষয়ে খুঁটিনাটি সব জেনে নেওয়া ভালো।

এখন জেনে নিন কিভাবে পাসপোর্ট করা যায়…

পাসপোর্ট পেতে হলে প্রথমেই ইন্টারনেট থেকে বিনামূল্যে ফরম সংগ্রহ করতে হবে। ফরম ডাউনলোড করতে ক্লিক করুনঃ পাসপোর্ট ফর্ম ( অথবা পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেই (http://www.dip.gov.bd) এই ফরম পাওয়া যাবে।) এ ছাড়া ঢাকাসহ সারা দেশে ১০টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকেও সংগ্রহ করা যাবে এ ফরম। নির্ধারিত ফরম নিজ হাতে পূরণ করতে হবে।

আবেদনপত্র পূরণ করার নিয়মঃ

চার পৃষ্ঠার এ আবেদনপত্রে আবেদনকারীকে নাম, বাবার নাম,মায়ের নাম, তাদের পেশা, জাতীয়তা, জন্মস্থান, জন্ম তারিখ, জন্ম সনদপত্র নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, যোগাযোগের তথ্য সরবরাহ করতে হবে। এসব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে আবেদনকারীকে নির্দিষ্ট জায়গায় স্বাক্ষর ও তারিখ লিখতে হবে। এ ছাড়া আবেদনকারীকে একটি ৫৫ বাই ৪৫ মিলিমিটার আকারের রঙিন ছবি (পাসপোর্ট সাইজ ছবি) ফরমে আঠা দিয়ে লাগানোর পর সত্যায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে, দুটি আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে।

যারা সত্যায়িত করতে পারবেনঃ

আবেদনপত্রের ফরমে সত্যায়ন করতে পারবেন- ১. সাংসদ ২. সিটি করপোরেশনের মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৩. গেজেটেড কর্মকর্তা ৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ৫. উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ৬. পৌরসভার মেয়র ৭. বেসরকারি কলেজের শিক্ষক ৮. বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ৯. দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ১০. পৌর কাউন্সিলর ১১. রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের নতুন জাতীয় বেতন স্কেলের সপ্তম বা তদূর্ধ্ব গ্রেডের কর্মকর্তারা।

নতুন পাসপোর্ট আবেদনের নির্ধারিত ফিঃ

জরুরী পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ৬ হাজার টাকা ও সাধারণের ক্ষেত্রে প্রয়োজন ৩ হাজার টাকা। ইতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদন পাওয়া গেলে জরুরী পাসপোর্ট সাত দিন ও সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১৫ দিন পর ইস্যু করা হবে। তবে সরকারী কর্মকর্তা,কর্মচারী ও তাদের নির্ভরশীলদের জন্য পাসপোর্ট ফি ৩ হাজার টাকা। তবে তাদের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রতিবেদনের প্রয়োজন নেই। এসব ফি সোনালি ব্যাংকের নির্ধারিত শাখায় জমা দিতে হবে।

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার আগে করণীয়ঃ

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার আগেই তা নির্দিষ্ট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা এটি ভেরিফিকেশন বা যাচাই করবেন। আবেদনপত্রটি ভেরিফিকেশন করানোর আগে এর সঙ্গে ব্যাংককে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ আঠা দিয়ে আবেদনপত্রের সঙ্গে যোগ করে দিতে হবে। এ ছাড়া আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ছবিটিও যথাযথ কর্মকর্তাকে দিয়ে সত্যায়িত করে নিতে হবে। পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপিও সত্যায়িত হতে হবে। যদি কারও জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকে, তাহলে পাসপোর্ট ফরমের তৃতীয় পৃষ্ঠার নির্দিষ্ট স্থানে বসবাসরত এলাকার জনপ্রতিনিধি দ্বারা প্রত্যয়ন করে নিতে হবে। এমআরপির আবেদন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে দেশের ১০টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। প্রতিটি আঞ্চলিক অফিসের অধীনে রয়েছে কয়েকটি জেলা। আঞ্চলিক অফিসগুলো হলো- ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, রাজশাহী, বরিশাল, রংপুর, যশোর ও গোপালগঞ্জ।

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার নিয়মঃ

আবেদনপত্রটির ভেরিফিকেশনের পর দায়িত্বরত কর্মকর্তা সেটি যাচাই করে সিলসহ স্বাক্ষর করবেন। এরপর আবেদনপত্রটি নির্দিষ্ট স্থানে জমা দিতে হবে। পাসপোর্ট অফিসেই খোলা আছে বেশ কয়েকটি বুথ। এসব বুথেই জমা দিতে হবে।

আবেদনপত্রটি জমা দেবার সময় পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বরত ব্যাক্তি আপনার তথ্যগুলো কম্পিউটারে এন্ট্রি করে রাখবেন। এরপর তিনি আপনাকে একটি টোকেন দেবেন। এরপর সে টোকেনসহ আবেদনপত্রটি নিয়ে ছবি তোলার জন্য আরেকজন কর্মকর্তার কাছে যেতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য যেভাবে ছবি তোলা হয়েছিলো,এখানেও একইভাবে নির্দিষ্ট মাপের ছবি তোলা হবে। এছাড়াও দুই হাতের আঙ্গুলের ছাপও দিতে হবে ইলেকট্রনিক মেশিনে । তারপর নেয়া হবে ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর। তবে, ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর আবেদন পত্রের স্বাক্ষরের সঙ্গে যেনো মিল থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এই প্রক্রিয়া শেষে কর্তৃপক্ষ পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য একটি আলাদা ডকুমেন্ট দেবে এবং আবেদনপত্রটি রেখে দিয়ে আপনাকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার তারিখও জানিয়ে দেবেন।

পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে করণীয়ঃ

পাসেপোর্ট হারিয়ে গেলে নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি)মূলকপি সহ আবেদনপত্র জমা দিতে হবে। সম্ভব হলে  হারিয়ে যাওয়া পাসপের্টের ফটোকপি আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ৬  হাজার টাকা ও সাধারণের ক্ষেত্রে ৩ হাজার টাকা ফি প্রয়োজন। এ ধরনের পাসপোর্ট অনুকূল পুলিশি প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১৫ দিন ও সাধারণের ক্ষেত্রে ৩০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।

পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ, পাতা শেষ বা নষ্ট, ছবির মিল নেই-এসব ক্ষেত্রে করণীয়ঃ

আবেদনপত্রের সাথে পুরাতন পাসপোর্টের ৯ পাতা পর্যন্ত ফটোকপি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ৬ হাজার টাকা ও সাধারণের ক্ষেত্রে ৩ হাজার টাকা ফি দিতে হবে। এ ধরনের পাসপোর্ট অনুকূল পুলিশি প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ১৫ দিন ও সাধারণের ক্ষেত্রে ৩০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়।

 

ক্রমিক নম্বরপাসপোর্ট কর্তৃপক্ষযেসব জেলার জন্য প্রযোজ্যঠিকানাফোন নম্বর
ঢাকা বিভাগের পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসমতিঝিল, পল্টন, খিলগাঁও, সবুজবাগ, ‍মিরপুর, শাহআলী, পল্লবী, কাফরুল, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, আদাবর, গুলশান, ক্যান্টনম্যান্ট, খিলক্ষেত, রমনা, শাহবাগ, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, ধামরাই ও সাভার।পাসপোর্ট ভবন, ই-৭, আগারগাঁও, শের-ই- বাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭।০২-৮১৫৯৫২৫
চট্টগ্রাম বিভাগের পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসকোতয়ালী, পাহাড়তলী, চাঁদগাঁও, পাঁচলাইশ, বন্দর, ডবল মুরিং, কর্ণফুলী, খুলশী, হালীশহর, বায়েজিদ বোস্তামী, বাকলিয়া, পতেঙ্গা, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও রাউজান থানা।মানসুরাবাদ, চট্টগ্রাম।০৩১-২৫৫০০১০
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কুমিল্লা।কুমিল্লা সদর (কোতয়ালী), চান্দিনা, বুরিচং, দেবিদ্বার, দাউদকান্দি, হোমনা, ব্রাহ্মণপাড়া, মুরাদনগর, মেঘনা, মনোহরগঞ্জ ও তিতাস থানানোয়াপাড়া, কুমিল্লা।০৮১-৬৫৭৮৬
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ময়মনসিংহ।ময়মনসিংহ জেলাজিলা স্কুল রোড, ময়মনসিংহ।০৯১-৬৬৩৫৭
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, গোপালগঞ্জ।গোপালগঞ্জ জেলাচাঁদমারী রোড, গোপালগঞ্জ০৬৬৮-৫৭০৮৯
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, নোয়াখালী।নোয়াখালী জেলাহাসপাতাল রোড, নোয়াখালী০৩২১-৬১৭০৪
বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, রাজশাহী।রাজশাহী জেলাহাতেম খাঁন, রাজশাহী০৭২১-৭৭২২৪৮
বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, রংপুর।রংপুর জেলাসড়ক নং-৫, মুলাতলী, রংপুর০৫২১-৬৩২৫০
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, সিরাজগঞ্জ।সিরাজগঞ্জ জেলা০৭৫১-৬২৯০৩
১০বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, খুলনা।খুলনা জেলাবাড়ী নং – ৩৮, সড়ক নং- ৫, সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা, খুলনা০৪১-৭৩২১৪৬
১১আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, যশোর।যশোর জেলানাজিরশংকরপুর, যশোর০৪২১-৭৩৫০৭
১২বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, বরিশাল।বরিশাল জেলাবন্ধ রোড, বরিশাল০৪৩১-৬৪৫৪৯
১৩বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস, সিলেট।সিলেট জেলাবাড়ী নং- ৫৭, সড়ক নং-২, ব্লক-ই, শাহজালাল উপশহর, সিলেট০৮২১-৭১৪০২২
১৪আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, হবিগঞ্জ।হবিগঞ্জ জেলাকোরেশ নগর এলাকা০৮৩১-৫২৮৯৪
১৫আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ফরিদপুর।ফরিদপুর জেলাঝিলতলী, ফরিদপুর০৬৩১-৬২৭৮৭
১৬আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, চাঁদপুর।চাঁদপুর জেলা০৮৪১-৬৬৪৪৭
১৭আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মানিকগঞ্জ।মানিকগঞ্জ জেলা০৬৫১-৫১০১০
১৮আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মুন্সিগঞ্জ।মুন্সিগঞ্জ জেলা
১৯আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, বগুড়া।বগুড়া জেলা
২০আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, দিনাজপুর।দিনাজপুর জেলা
২১আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, পাবনা।পাবনা জেলা
২২আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, পটুয়াখালী।পটুয়াখালী জেলা
২৩আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মৌলভীবাজার।মৌলভীবাজার জেলা
২৪আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, টাঙ্গাইল।টাঙ্গাইল জেলা
২৫আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, চাঁদগাঁও, চট্টগ্রাম।চাঁদগাঁওপাঁচলিশ, চট্টগ্রাম
২৬আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, উত্তরা,  ঢাকা।উত্তরা, দক্ষিণখাঁন, উত্তরখাঁন, তুরাগ, বিমানবন্দর, বাড্ডা, আশুলিয়া ও গাজীপুরবাড়ী নং-২৯, সড়ক নং-৭, সেক্টর-১২, উত্তরা, ঢাকা০২-৮৯৬২০৩৯
২৭আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।যাত্রাবাড়ী, নারায়নগঞ্জ, ডেমরা, দোহারবাড়ী নং-৩৬০৫, মুজাহিদনগর, রায়েরবাগ, কদমতলি, ঢাকা০২-৭৫৪২০৩৩
২৮আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কিশোরগঞ্জ।কিশোরগঞ্জ জেলা
২৯আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, নরসিংদী।নরসিংদী জেলা
৩০আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ফেনী।ফেনী জেলা
৩১আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা
৩২আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কক্সবাজার।কক্সবাজার জেলা
৩৩আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, রাঙ্গামাটি।রাঙ্গামাটি জেলা
৩৪আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কুষ্টিয়া।কুষ্টিয়া জেলা