‘শিশুদের সঞ্চয়ের টাকায় একটি নতুন ব্যাংক খোলা সম্ভব’

green banking

green bankingগত তিন বছরে শিশুরা ২ লাখ ৮৬ হাজার একাউন্টে তিনশ চার কোটি টাকা সঞ্চয় করেছে।আর মাত্র ৯৬ কোটি টাকা জমা হলে তারা নিজেরাই একটা ব্যাংক খুলতে পারবে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.আতিউর রহমান।শনিবার সকালে চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনীর হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত দিনব্যাপী ‘স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

ড. আতিউর রহমান বলেন,স্কুল শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পথশিশুরাও যাতে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারে সেজন্য দু-একদিনের মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০১০ সালের ২ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমে দেশের ৪৭ ব্যাংকে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ লাখ ৮৬ হাজার শিক্ষার্থী হিসাব খুলেছে। এসব একাউন্টে তিনশ চার কোটি টাকা সঞ্চয় হয়েছে।

ছোটবেলা থেকে সঞ্চয়ী হয়ে ওঠতে স্কুল ব্যাংকিং অনেক বড় ভূমিকা রাখবে। সুবিধাবঞ্চিত পথ শিশুদেরও এ ব্যাংককিং আওতায় আনা হবে।পথ শিশুরা যাতে ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলতে পারে সে বিষয়ে দু একদিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। ৬-১৮ বছরের শিশুরা মাত্র ১০ টাকা দিয়ে এ সুবিধা পাবে।এসব হিসাবে কেবলমাত্র সরকারি ছাড়া অন্য কোনো সার্ভিস চার্জ বা ফি আরোপ করা হয় না। এসব হিসাবের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি সংগ্রহ করতে পারবে।বৃত্তি,উপবৃত্তির টাকাও এসব হিসাবে জমা করা যাবে।

আতিউর রহমান তার ছেলে বেলার স্মৃতিচারণ করে বলেন,ছোট বেলা ব্যাংকের শাখা দেখে তার ভিতরে প্রবেশ করার বিষণ ইচ্ছে ছিল আমার।কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্বেও পারিনি কারণ ব্যাংক ছিল শুধুই বড়দের।

টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার জন্যে আর্থিক সেবাবঞ্চিত জনসাধরণকে অর্থনীতির মূল ধারাতে নিয়ে আসার কোন বিকল্প নেই।

এ ক্ষেত্রে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যদি ছোটবেলা থেকেই নিজেদের মধ্যে সঞ্চয়ের মনোভাব গড়ে তোলে নিজেদের আর্থিক ভিতকে মজবুত করে তুলতে পারে। যা একদিকে যেমন ব্যক্তির ভবিষ্যৎ সুদৃঢ় করবে,অন্যদিকে টেকসই করতেও কার্যকর ভুমিকা রাখবে।

নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এখন থেকে মাত্র ১০ শতাংশ সুদের ঋণ ক¤িপউটার কিনতে পারবেন ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা ও শিক্ষার্থীরা। আর মাত্র ২০ শতাংশ এককালীন অর্থ বা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে তারা এ কম্পিউটার কিনতে পারবেন।নারী উদ্যোক্তারা ই-কমার্সের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন করতে পারবে বলে তিনি জানান।

অনুষ্ঠান শেষে নৃত্য পরিবেশন করেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের শিল্পীরা।ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও।এছাড়া শিক্ষার্থীদের স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলার মেলায় ব্যাংকের ৫২টি স্টল অংশ নেয়।মেলায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ম মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম কামাল ভূঁইয়া,বিশেষ অতিথিছিলেন রূপালী ব্যাংকের মহা ব্যবস্থাপক দেবাশীষ চক্রবর্তী,বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ নওশাদ আলী চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক অধ্যাপক হান্নানা বেগম।