এফএটিএফ’র স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ

fatf

fatfবাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপ মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের কারণে আন্তঃসরকার সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। তাই এখন আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশের খরচও কমবে। আর এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের লেনদেন আর এফএটিএফ’র পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকবে না।

এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্যারিসে টাস্কফোর্সের সভায় বলা হয়, মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে অগ্রগতি দেখিয়েছে এফএটিএফ তাকে স্বাগত জানিয়েছে। ২০১০ সালে কৌশলগত যে ঘাটতি চিহ্নিত করা হয়েছিল তা মিটিয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে একটি আইনি ও নিয়ন্ত্রণমূলক কাঠামো তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশকে এখন থেকে আর এফএটিএফ-এর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার আওতায় থাকতে হবে না।

আজ সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এই স্বীকৃতির ফলে মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধ সম্পর্কিত জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশন-প্রোটোকল, নিরাপত্তা পরিষদের বিভিন্ন রেজুলেশন ও এফএটিএফর মানদণ্ড পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নকারী দেশের মর্যাদা অর্জন করল বাংলাদেশ।

এই স্বীকৃতির ফলে আমদানি-রপ্তানির খরচ কমবে। এতোদিন লিস্টে থাকার কারণে এলসি খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এক শতাংশ পর্যন্ত চার্জ (এলসি কনফার্মমেশন চার্জ) দিতে হতো। এখন এই চার্জ দশমিক ২৫ থেকে দশমিক ৫ শতাংশ দিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান বলেন, গত অর্থবছরে ২৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই রপ্তানির বিপরীতে এক শতাংশ হারে এলসি কনফার্মমেশন চার্জ দিতে হয়েছে। এখন এটা দশমিক ৫ শতাংশ দিলেই চলবে।

গত সাড়ে তিন বছরে বাংলাদেশ সরকার মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন প্রণয়ন, সন্ত্রাস প্রতিরোধ আইন সংশোধন, অপরাধ সম্পর্কিত পারস্পরিক সহায়তা আইন প্রণয়ন এবং এসব আইনের বিধিমালা তৈরি করেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এছাড়া, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নকে রাষ্ট্রোদহ আইনের তফসিলভুক্ত করা, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন, ‘ন্যাশনাল রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট’ শেষ করা, আর্থিক খাতের প্রায় সব সংস্থাকে জবাবদিহির আওতায় আনাসহ বিভিন্ন পদেক্ষপ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, এই সাফল্য অর্জনে আমরা সফল না হলে ঝুঁকিপূর্ণ দেশে পরিণত হতাম। তখন কেউ আমাদের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চাইত না।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসলাম আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর আতিউর রহমানসহ বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।