
পাঠ্যপুস্তকের সহায়ক হিসেবে নোট বই প্রকাশ নিষিদ্ধ থাকলেও কুমিল্লায় বইয়ের বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এসব নোট বই।
চলতি শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই বাজারে অবাধে নোট বিক্রি হলেও আইন-শৃখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিংবা প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। এদিকে শিক্ষা আইন ২০১৩-এ নোট বই নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে প্রবল আপত্তি রয়েছে প্রকাশকদের। আইনটি বাস্তবায়ন করা হলেও তা চ্যালেঞ্জ করবে বলে জানিয়েছেন নোট বই প্রস্তুতকারক কর্তৃপক্ষ।
কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন বইয়ের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বইয়ের দোকানে নোট বই বিক্রি করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরাও সাবলীলভাবেই এসব বই কিনছেন।
কুমিল্লার নিউ মার্কেট ও রাজগঞ্জ বইয়ের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মাসের শুরুতেই অবাধে চলছে নোট বই বিক্রির ধুম। পাঠানো হচ্ছে কুমিল্লার বিভিন্ন স্কুলে কিংবা বাজারে। সৃজনশীল বইয়ের নাম করে বাজারজাত করা হচ্ছে এসব বই। অভিযোগ উঠেছে কিছু কলেজ শিক্ষার্থীদের হাতের লেখায় তৈরি নিন্মমানের বই চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে নামিদামি স্কুলের শিক্ষকদের নামে।
রাজগঞ্জে বই কিনতে আসা রাশেদ আহম্মেদ বলেন, সব অভিভাবকই নতুন বছরের শুরুতেই নোট বই কিনে দেন। ফলে আইন মেনে বই না কিনলে শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে।
এদিকে, একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, প্রায় স্কুলের শিক্ষকরা এখনও ছেলে-মেয়েদের নোট বই কেনার জন্য নির্দেশ দেন। কারণ নোট বই কিনে দেওয়া ছাড়া আর অন্য কোনো উপায় নেই তাদের।
কুমিল্লার ফয়জুন্নেসা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মনির হোসেন বলেন, পাঠ্য তালিকা থেকে আমরা ইতোমধ্যে নোট বই বন্ধ করে দিয়েছি। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের নোট বই কিনতে নিষেধও করা হয়েছে। তবে নোট বই বন্ধ না হলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতেই শিক্ষার্থীরা তা কিনবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকেরা।
বই বিক্রেতারা এ জন্য দায়ী করছেন প্রকাশক ও আইন প্রণেতাদের। তবে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন প্রকাশকরা। তাদের বক্তব্য, নোট বই প্রকাশ বন্ধ করলে শিক্ষার্থীদের চাহিদা বিবেচনা করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিন্ম মানের বই বের হবে। ফলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের দেওয়া বাণিজ্যিক নোট ও নিন্মমানের প্রকাশকদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়বেন।
এদিকে, পঞ্চম অধ্যায়ের ৫১ ধারার ১ উপ-ধারায় বলা হয়েছে, গাইড বই, নোট বই তৈরি এবং সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে। তাই সাধারণ অভিভাবকরা দাবি করেছেন সরকারের যে উদ্যোগ নোট বই বন্ধ করার তাতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের কিছুটা সচেতন হতে হবে।