
সিম প্রতিস্থাপন ইস্যুতে ৩ হাজার ৬২ কোটি টাকার কর নিয়ে দীর্ঘ বিরোধের নিষ্পত্তি হচ্ছেই না। আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরও জটিলতা কাটছে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে চলমান চার অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও এয়ারটেলের বিরোধ উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এসবের ভিত্তিতে এনবিআর একটি ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠন করলেও তাতে চূড়ান্ত কোনো সমাধান হয় নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জটিলতা নিরসনে বিলম্বের জন্য এনবিআর বাংলাদেশ টেলিকম রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) ও চার মোবাইল ফোন অপারেটরকে দোষারূপ করছে। সংস্থাটির মতে, ত্রিপক্ষীয় কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বিটিআরসি এবং চার অপারেটর তাতে সাক্ষর করছে না। আর এ কারণেই সংকট সমাধানের পথ খুলছে না।
উল্লেখ, কমিটির রিপোর্টে এনবিআরের দাবি ৩ হাজার ৬২ কোটি টাকা থেকে ৫২ কোটি টাকা কমিয়ে ৩ হাজার ১০ কোটি টাকা করা হয়। এদের মধ্যে গ্রামীণফোনের কর ১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা থেকে ১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। বাংলালিংকের কর ৭৭৪ কোটি টাকা থেকে ৭৬২ কোটি টাকা, রবির কর ৬৫৫ কোটি টাকা থেকে ৬৪৭ কোটি টাকা এবং এয়ারটেলের কর ৫২ কোটি টাকা থেক ৩৯ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়। এ হিসাব মানতে রাজী নয় চার অপারেটর।
জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর বিটিআরসি ও চার অপারেটরের স্বাক্ষর ছাড়াই রিপোর্ট জমা দেন কমিটির প্রধান এনবিরের কমিশনার আল আমিন প্রামাণিক। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানিগুলো আরও কম ট্যাক্সের দাবি করলেও তার স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি।
কমিটির রিপোর্ট নিয়ে টানাপোড়েনের কারণে বিষয়টি আবার আদালতে গড়াতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের আশংকা।
জানা যায়, ২০১২ সালে চারটি মোবাইল কোম্পানির কাছ থেকে সিম প্রতিস্থাপন কর বাবদ ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা দাবি করে এনবিআর। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের কাছে প্রায় ১ হাজার ৫৮০ কোটি, বাংলালিংকের কাছে ৭৭৪ কোটি, এয়ারটেলের কাছে ৮২ কোটি ও রবির কাছে ৬৬৪ কোটি টাকা দাবি করে। এ দাবির পক্ষে এনবিআরের যুক্তি ২০০৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত এসব কোম্পানি সিম রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে নতুন গ্রাহকদের কাছে পুরনো সিম বিক্রি করে। আর এনবিআর আইন অনুযায়ী নতুন গ্রাহকদের কাছে সিম বিক্রি করা হলে সিমের ওপর আরোপিত নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিতে হবে। এনবিআরের যুক্তি মানতে নারাজ মোবাইল কোম্পানিগুলো। তারা বলছে, নতুন কোনো গ্রাহকের কাছে তারা সিম বিক্রি করেনি। এ নিয়ে চলমান জটিলতা এখন নতুন মাত্রায় রূপ নিচ্ছে।