শস্য ঋণের প্রবৃদ্ধি ৩৩ শতাংশ

Masterd_Fieldবাংলাদেশ ব্যাংকের অব্যাহত চাপের মুখে ব্যাংকগুলোর শস্য খাতে রেয়াতি ঋণ (৪ শতাংশ সুদে) বিতরণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এ খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩২ দশমিক ৪২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকগুলো শস্য খাতে মোট ঋণ বিতরণ করেছে ৩৪ কোটি ৮৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু শস্য খাতে রেয়াতি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্র ছিল ৮৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ওই অর্থবছরের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকগুলো মোট শস্য ঋণ বিতরণ করেছিল ২৬ কোটি ৩৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। বিতরণকৃত এ ঋণ ছিল লক্ষ্যমাত্রার ২৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু শস্য ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকগুলো এ খাতে মোট ঋণ বিতরণ করেছে ৩৪ হাজার ৮৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। বিতরণকৃত এ ঋণ লক্ষ্যমাত্রার ৩৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে গত বছরের চেয়ে এ খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারী এবং ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণে উৎসাহিত করায় এ খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ছে। গভর্নর ড. আতিউর রহমানও এ ব্যাপারে নিয়মিত তদারকি অব্যাহত রেখেছেন। তিনি প্রতি মাসেই কৃষকদের সাথে মোবাইলে কথা বলে তারা এ ঋণ সঠিকভাবে পাচ্ছে কিনা তা খোঁজ খবর রাখছেন। ব্যাংকগুলোকে কৃষকদের এ ঋণ নিতে উৎসাহিত করতে প্রচারণা চালানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তারা।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, কৃষি ও পল্লী ঋণের একটি অংশ হচ্ছে এ শস্য ঋণ। তাই এ ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা মূলত মূল ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রারই একটি অংশ। কৃষি ও পল্লী ঋণের মধ্যে কতটুকু শুধু শস্য ঋণে তারা বিতরণ করবে তা ব্যাংকগুলো নিজেরাই ঠিক করে থাকে। প্রান্তিক পর্যায়ে বিদেশী ব্যাংকগুলোর শাখা না থাকায় তারা এ ঋণ বিতরণ করতে পারছে না বলে তারা জানান।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত শস্য খাতে বিতরণকৃত ৩৪ কোটি ৮৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা রেয়াতি ঋণের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চারটি ও বিশেষায়িত দুটি (বিকেবি ও রাকাব) ব্যাংক মিলে বিতরণ করেছে ২৮ কোটি ৬৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা। বিতরণকৃত এ ঋণ তাদের লক্ষ্যমাত্রার ৩৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

বিদেশী ৯টি ব্যাংকের মধ্যে একমাত্র সিটি ব্যাংক এনএ ছাড়া কোন ব্যাংক এ খাতে ঋণ বিতরণ করেনি। সিটি ব্যাংক এনএ তাদের লক্ষ্যমাত্রার ১০০ শতাংশই পূরণ করেছে।

দেশীয়  বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে ১০টি ব্যাংক এ খাতে কোন ঋণ বিতরণ করেনি। ব্যাংকগুলো হলো- ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড, সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড। এ সময়ের মধ্যে মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড এবং পূবালী ব্যাংক লিমিটেড তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ১০০ শতাংশই পূরণ করেছে।