
এ বছর খুলনায় শীতকালীন শাকসবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। এ কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার স্থানীয় বাজারগুলোতে শীতকালীন সবজি অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। আর দাম কমে যাওয়ায় কিছুটা হতাশায় ভুগছে চাষিরা।
খুলনার স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর শীতকালীন শাকসবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। যার কারণে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তার চেয়ে বেশি অর্জিত হবে বলে তারা আশাবাদী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশের তৃতীয় বৃহত্তম বিভাগ খুলনার ১০ জেলায় চলতি মৌসুমে ৬৯ হাজার ১৬ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১২ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিকটন। জেলা ভিত্তিক সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে খুলনায় ৫ হাজার ৪০৯ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ১ হাজার ১৪৮ মেট্রিকটন, বাগেরহাটে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৩১৮ হেক্টর জমিতে ৮০ হাজার ৭৪৭ মেট্রিকটন, সাতক্ষীরায় ৯ হাজার ২১২ হেক্টর ১ লাখ ৭২ হাজার ২৬৪ মেট্রিকটন, যশোরে ১৫ হাজার ১৭৬ হেক্টরে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৭৯১ মেট্রিকটন, নড়াইলে ২ হাজার ৭২২ হেক্টরে ৫০ হাজার ৯০১ মেট্রিকটন, ঝিনাইদহে ১০ হাজার ৬০৮ হেক্টর ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩৭০ মেট্রিক টন, মাগুরায় ৩ হাজার ৮৩৩ হেক্টরে ৭১ হাজার ৬৭৭ মেট্রিকটন, কুষ্টিয়ায় ৬ হাজার ৮৫৫ হেক্টরে ১ লাখ ২৮ হাজার ১৮৯ মেট্রিকটন, মেহেরপুরে ৩ হাজার ৬৯৮ হেক্টরে ৬৯ হাজার ১৫৩ মেট্রিকটন, চুয়াডাঙ্গায় ৭ হাজার ১৮৫ হেক্টরে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৬০ মেট্রিকটন।
বুধবার নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, হরতাল-অবরোধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে শীতকালীন শাকসবজি বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম অনেকটা কমে গেছে। প্রতি কেজি ফুলকপি ১২ টাকা, পাতাকপি ৬ টাকা, শিম ১৪ টাকা, বেগুন ২০ টাকা, লালশাক ১৬ টাকা, নতুন আলু ৮ থেকে ১০ টাকা, পুরাতন আলু ৬ থেকে ৮ টাকা, লাউ সাইজ অনুযায়ী প্রতিটি ১৫ থেকে ২০ টাকা, পালংশাক প্রতি কেজি ১০ থেকে ১২ টাকা, টমেটা ১৫ টাকা, গাঁজর ১৫ থেকে ২০ টাকা, পেঁপে ১০ থেকে ১২ টাকা, খিরই ২০ টাকা, মটরশুঁটি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুলনার সোনাডাঙ্গা পাইকারী কাঁচা বাজারের সুন্দরবন বাণিজ্য ভান্ডারের স্বত্তাধিকারী আশরাফ হোসেন জনান, বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় হঠাৎ করেই সবজির দাম কমে গেছে।
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার মাথাভাঙ্গা এলাকার কৃষক মোঃ আব্দুল্লাহ জানান, শীতকালীন শাকসবজির বাম্পার ফলন হলেও তুলনামূলক দাম কিছুটা কম।
তিনি আরও জানান, প্রতি বছর শীতকালীন শাকসবজি থেকে ৪ লাখ টাকা আয় হয়। এবার ২ লাখ টাকার মতো বিক্রি হতে পারে।
ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, তারা প্রথম একবার সবজির চাষ করেন কিন্তু বৃষ্টির কারণে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। দ্বিতীয় দফায় আবারও শীতকালীন সবজির চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলন ভাল কিন্তু দাম কমে যাওয়াতে তারা হতাশ, উদ্বিগ্ন।