
রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ২০ উপজেলায় আগামি ১৯ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষ তারিখ ২৫ জানুয়ারি আর যাচাই বাচাই হবে ২৭ জানুয়ারি। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ ফেব্রুয়ারি।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত প্রথম দফার তফসিলে রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলাসহ বিভাগের ২০টি উপজেলার নাম রয়েছে। এসব উপজেলার বর্তমান পরিষদের মেয়াদ ফেব্রুয়ারিতেই শেষ হয়ে যাবে। আর বাকি উপজেলাগুলোর নির্বাচন হবে মার্চ ও এপ্রিল মাসে।
রোববার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম দফার তফসিল ঘোষণা করেন।
আগামি ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলাসহ বিভাগের আট জেলার যে উপজেলাগুলোতে নির্বাচন হবে সেগুলো হলো- চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা, নওগাঁর রানীনগর, মান্দা ও মহাদেবপুর উপজেলা, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা, নাটোরের সিংড়া উপজেলা, সিরাজগঞ্জের সদর, কাজীপুর, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া উপজেলা, পাবনার সাঁথিয়া, সুজানগর ও আটঘরিয়া উপজেলা, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া, সারিয়াকান্দি, ধুনট, নন্দীগ্রাম, শেরপুর ও সোনাতলা উপজেলা।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, সদ্য সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়ায় নতুন করে তেমন কোনো প্রস্তুতির ব্যাপার থাকছে না উপজেলা নির্বাচনে। সংসদ নির্বাচনের কারণে ভোটগ্রহণের কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত হয়ে আছে। তবে স্থানীয় নির্বাচন হওয়ায় উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য বুথের সংখ্যা কিছু বাড়াতে হবে। নির্বাচন কমিশন থেকে ইতোমধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য চিঠিপত্র এসেছে। সোমবার মনোয়নপত্র চলে আসবে। আমরা নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুত আছি।
উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মাঠে নেমেছে রাজশাহীর মোহপুর উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে এ উপজেলায় বইতে শুরু করেছে নির্বাচনের আমেজ। এরই মধ্যে দলের সমর্থন নিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী। এ উপজেলায় কে কে প্রার্থী হতে পারেন এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে এবার একাধিক প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ছাড় দিতে চাইছে না জাতীয় পার্টি ও জামায়াত।
মোহনপুর উপজেলায় এবারো দলীয় প্রার্থী হতে আগ্রহী রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের ভগ্নিপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম। এছাড়া এ উপজেলা এবার প্রার্থী হতে চান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক। আর বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শামিমুল ইসলাম মুন এবারো প্রার্থী হবেন। তবে এখানে এবার নির্বাচন করতে চান উপজেলা বিএনপির আরেক সহ-সভাপতি ও কেশরহাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন।
এদিকে, দলের সিদ্ধান্তে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলেও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মাঠ ছাড়তে নারাজ বিএনপির নেতাকর্মীরা। তফসিল ঘোষণা হচ্ছে এমন খবরে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজশাহীর নয় উপজেলার বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিএনপি নেতাদের মতে, স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে দিয়ে সংগঠন ধরে রাখা যাবে না। ফলে দলের হাই কমান্ড যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন বলে জানান তারা।
জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তেমন প্রভাব পড়ে না। ফলে এ ব্যাপারে কেন্দ্র থেকেও কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আসে না। তিনি আরও বলেন, এ নির্বাচন বর্জনের হাই কমান্ডের কোনো সিদ্ধান্ত না আসলে জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতবৃন্দ সমন্বয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোন উপজেলায় কে দলীয় প্রার্থী হবেন।
কেএফ