
বাজারে সূচক ও লেনদেন ধারা ইতিবাচক হলেও দুর্বল শেয়ারগুলোর দাপটে কোনঠাসা হয়ে পড়ছে ভাল মৌলের শেয়ারগুলো।প্রায় প্রতিদিনই মূল্য বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসছে এসব শেয়ার। এতে বাজারের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মৌলভিত্তির শেয়ারের বিনিয়োগকারীরা।
গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য বৃদ্ধির শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানির মধ্যে আটটিই ছিল তুলনামূলক দূর্বল মৌলের। এদর বেশিরভাগই বি ও জেড ক্যাটাগরির।এ ধরনের কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ও শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ার কারণে একটি চক্র সব সময় কারসাজির জন্য এসব শেয়ারকে বেছে নেয়।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে শেয়ারের দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল আরামিট সিমেন্ট। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ছিল কেঅ্যান্ড কিউ ও ইমাম বাটন। শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় বাকী সাত কোম্পানি হচ্ছে ইমাম বাটন,মেঘনা কনডেন্স মিল্ক,অলটেক্স লিমিটেড,দুলামিয়া কটন, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, কাশেম ড্রাইসেলস,প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
জানা যায়,প্রকৌশল খাতের কোম্পানি কে এন্ড কিউ সবচেয়ে দূর্বল কোম্পানির জন্য নির্ধারিত জেড ক্যাটাগরিতে রয়েছে।গত সপ্তাহে এ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩৪ শতাংশ।বৃহস্পতিবার এর সর্বশেষ দাম ছিল ২৩ টাকা ৩০ পয়সা।এদিনও কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১.৪ টাকা বা ৬.৩৯ শতাংশ।
কোম্পানিটি তার হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে টানা লোকসান দিয়েছে। এটি ২০১২ সালে কোনো ডিভিডেন্ড দেয় নি। আর আগের বছরগুলোতে ডিভিডেন্ড দিলেও তা ছিল নাম মাত্র। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এদিকে টপটেন গেইনারের তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের ইমাম বাটন। এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩৩ বেড়েছে।এ কোম্পানিও ধারাবাহকভাবে গত কয়ক বছর ধরে লোকসান দিয়ে আসছে।গত ৩ বছরে এটি কোনো ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ ঘোষণা করে নি।কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন রয়েছে মাত্র ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
তালিকায় দুলুমিয়া কটনও একটি লোকসানি কোম্পানি। গত কয়ক বছরে কোম্পানিটি কোনো মুনাফা করতে পারে নি। গত তিন বছরে এ কোম্পানি কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারে নি। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
অপরদিকে খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানি মেঘনা কনডেন্স মিল্ক লোকসানে থেকেও গেইনারে উঠে এসেছে। বিগত বছরগুলোতে কোম্পানিটি লোকসান গুনতে গুনতে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারে নি।
এ প্রসঙ্গে বাজার বিশেষজ্ঞরা বলেন,ঋণের দায়ে জর্জরিত,উৎপাদন বন্ধ এবং অস্তিত্বহীন কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত বাজার দখল করে রাখাটা অযৌক্তিক।এতে মৌলভিত্তির শেয়ারগুলো তলানিতে চলে যাচ্ছে। আর দুর্বল শেয়ারগুলো বাজার দখল করে রাখলে বিনিয়োগকারীরাও বাজারে আস্থা পাবে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিৎ এইসব দূর্বল শেয়ারগুলোকে নিয়ে যারা কারসাজির সাথে জড়িত,তাদেরকে শাস্তি দেওয়া।