বাংলাদেশ থেকে জাহাজ কিনবে নিউজিল্যান্ড

shipyard_newবাংলাদেশ থেকে ৮০ লাখ ডলার মূল্যের ফেরি (জাহাজ) কেনার কথা জানিয়েছে নিউজিল্যান্ড সরকার। দেশটির তোকেলো থেকে সামোয়া রুটে এটি চলাচল করবে। মঙ্গলবার রেডিও নিউজিল্যান্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দেশটির মেরিন এসোসিয়েশের পরিচালক পিটার বাসফিল্ডের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউজিল্যন্ড পর্যন্ত এটি চালু করতে মোট খরচ পড়তে পারে প্রায় দেড় কোটি ডলার।

বাসফিল্ডের বরাত দিয়ে ও প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে তুলনামূলক অনেক কম খরচে জাহাজ বা ফেরি কেনা যায়। কম দামে ভালো মানের নিশ্চয়তা আছে বলেই বাংলাদেশ থেকে ফেরিটি কিনতে চায় নিউজিল্যান্ড।

নিউজিল্যান্ডের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রী স্টিভিন জয়সিও বিষয়টি স্বীকার করেছে বলেন, ‘ আমাদের দেশে একটি ফেরি তৈরির জন্য যে খরচ পড়বে, বাংলাদেশ থেকে এই ফেরি কিনলে প্রায় ৩ গুণ সস্তায় কেনা যাবে।’

মঙ্গলবার রেডিও নিউজিল্যান্ডের ‘সামার রিপোর্ট’-এ তিনি জানান, বাংলাদেশ থেকে ফেরি কেনার জন্য মোট খরচ ২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের নিচে পড়বে না। তবে খরচের বিষয়টি পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশের জাহাজ রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।বিশ্ব বাজারে জাহাজের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। জাহাজ নির্মাণের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া, চিন, জাপান, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুর বেশি অর্ডার পেয়েছে। ফলে সেসব দেশ নতুন অর্ডার নিতে প্রস্তুত নয় এবং ২০ হাজার টন ধারণক্ষমতার নিচে কোনো জাহাজ তৈরি করতে তারা আগ্রহী নয়। ফলে ছোট ও মাঝারি আকারের সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণের জন্য প্রস্তুতকারী দেশগুলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর ওপর অনেকটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এতে জাহাজ নির্মাণশিল্পের বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার সৃষ্টি হয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ২০১১-১২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বরে জাহাজ রপ্তানি করে দুই কোটি ২৪ লাখ ডলার রপ্তানি আয় করছে বাংলাদেশ।গেল ২০১২-১৩ অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার। তবে নানা করণে আলোচ্য বছরে জাহাজ রপ্তানি হয়েছে বেশ কম।

এদিকে বাংলাদেশ থেকে জাহাজ কেনার ঘোষণার পর দেশটিতে এ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। দেশটির সরকার সম্প্রতি ফেরি প্রস্তুত কাজে সুবিধা বাড়াতে বেশ কিছু আইনে পরিবর্তন আনে। এর পরে  হঠাৎ করে এখন বাংলাদেশ থেকে ফেরি কেনার ব্যাপারকে তাদের জন্য ‘ফানি বা জোক’ হিসেবে মনে করছেন দেশটির শ্রমপার্টির প্রধান শেন জোনস।  তারমতে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা দেশটির নৌ নির্মাতাদের জন্য শুভ নয়। বরং এতে করে নৌ নির্মাতাদের কাজ  ঘরে বসে থাকা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।