রাজশাহীতে টমেটোর বাম্পার ফলনেও চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত

  • Emad Buppy
  • January 13, 2014
  • Comments Off on রাজশাহীতে টমেটোর বাম্পার ফলনেও চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত
Tomato

Tomatoরাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলায় চলতি মৌসুমে শীতকালীন টমেটোর বাম্পার ফলন হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। অবরোধ, হরতাল ও রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে এ অঞ্চলে উৎপাদিত টমেটো ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো সম্ভব না হওয়ায় টমেটো পচে নষ্ট হচ্ছে। আবার স্থানীয় বাজারগুলোতে সরবরাহ বেশি থাকায় কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। আর এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছর গোদাগাড়িতে সাড়ে ৩’শ থেকে ৪’শ কোটি টাকার টমেটো বাণিজ্য হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে ১’শ কোটি টাকার টমেটোও বাণিজ্য হবে না। উপজেলার মহিশালবাড়ি, লালবাগ, কলেজ মোড়, উজানপাড়া, রেলগেট বাইপাস, কাদিপুর, সাহাবিদপুর, বিজয়নগর, রাজাবাড়ি হাট-বাজারে প্রতিমন টমেটো বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১’শ ৩০ থেকে ১’শ ৫০ টাকায়।

চাষিরা জানান, বাজারে টমেটোর দাম একেবারেই নেই। টমেটো উত্তোলন করতে গিয়ে শ্রমিকের মজুরি বেশি লেগে যাওয়ার কারণে জমি থেকে টমেটো তুলতে আগ্রহ হারাচ্ছে তারা।

কৃষকরা জানান, প্রতিবিঘা টমেটো চাষে খরচ হয়েছে ১৭ থেকে ২০ হাজার টাকা। যেসব কৃষকরা আগাম টমেটো চাষ করতে পেরেছে তারাই কেবল খরচ তুলতে পেরেছে। তবে বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ কৃষকই জমিতে বিলম্বে টমেটো চাষ করে। এসব কৃষক এখন পর্যন্ত উৎপাদন খরচ তুলতে না পেরে আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

সাগরপাড়া গ্রামের কৃষক এনামূল হক গত মৌসুমে টমেটোর চাষ করে লাভবান হওয়ায় এবার ৫ বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি জানান, টমেটোর সরবরাহ বেশি থাকলেও ক্রেতা কম ছিল। অবরোধের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীরা আসতে পারে নি।

নাটোরের সবজি ব্যবসায়ী শাহজাহান আলী বলেন, অবরোধের কারণে পরিবহন ভাড়া বেড়ে গেছে। স্বাভাবিক অবস্থায় চট্টগ্রাম যেতে ট্রাকের ভাড়া ছিল ২৬ হাজার টাকা। অবরোধের কারণে চট্টগ্রামে ১ ট্রাক টমেটো পাঠাতে ভাড়া লেগেছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ঢাকাতেও টমেটো পাঠাতে হয়েছে ৩ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে।

ট্রাক মালিকেরা জানান, অবরোধের মধ্যে ট্রাকে আগুন দিয়ে নাশকতার ভয় ও সড়কে অবরোধকারীদেরকে চাঁদা দেওয়ার কারণেই ট্রাক ভাড়া বেশি নিতে হচ্ছে। এছাড়াও অবরোধে ডিজেল ও পেট্রোলের দাম বেড়ে গেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, সময়মতো টমেটোর ট্রাক ঢাকা ও চট্টগ্রামে পাঠাতে না পারলে টমেটো পচে নষ্ট হয়ে যায়। আর টমেটো বেশি পেঁকে যাওয়ার কারণে কম দামে ঢাকা ও চট্রগ্রামের কাঁচাবাজারে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এতে অধিকাংশ ব্যবসায়ীই লোকসানের শিকার হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে গোদাগাড়ি কৃষি কর্মকর্তা ড. সাইফুল আলম বলেন, এবার টমেটোতে চাষী ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় আগামি বছর টমেটোর চাষ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাবে। আর এর জন্য হরতাল-অবরোধের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচিকে দায়ী করেন তিনি।

কেএফ