হঠাৎ খাদ্যশস্য (চাল ও গম) আমদানি বেড়ে যাওয়ায় বিস্মিত স্বয়ং বাংলাদেশ ব্যাংক। এর কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর নিজেই।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বিস্ময় প্রকাশ করে এর প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) চাল ও গম আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয়েছিল ৩৪ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলারের। আর এ সময়ে নিস্পত্তি করা হয়েছিল ২৯ কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলারের। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এসব পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৫৫ কোটি ২১ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলারের আর নিস্পত্তি করা হয়েছে ৬০ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের। অর্থাৎ গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে ৫৮ দশমিক ২৭ শতাংশ এবং নিস্পত্তি বেড়েছে ১০৪ দশমিক ১৭ শতাংশ।
সূত্র জানিয়েছে, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ খাদ্যশস্য উৎপাদনে অনেক এগিয়েছে। ব্যাংক থেকেও এসব পণ্য উৎপাদনের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষক পর্যায়ে যথাযথভাবে এ ঋণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে নানামুখী তৎপরতা। কিন্তু তারপরও এসব পণ্যের আমদানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বিস্মিত গভর্নর নিজেই। তাই এর কারণ অনুসন্ধানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা অর্থসূচককে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তাই সামান্যকিছু খাদ্যশস্য আমদানি করলেই বছরের চাহিদা মিটে যায়। তাছাড়া দেশে এবছর কোনো খরা বা বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি। ফলে ফসলও নষ্ট হয়েছে কম। কিন্তু তারপরও খাদ্যশস্য আমদানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়া সত্যিই সন্দেহের বিষয়। এর পিছনে অর্থ পাচার জড়িত আছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। কারণ এসব পণ্য আমদানি করতে কোনো শুল্ক দিতে হয় না। ফলে আমদানির আড়ালে অর্থ পাচারের একটা আশঙ্কা থেকেই যায় বলে তিনি জানান।
এআর