শেখ হাসিনাকে ছেড়ে যাচ্ছে না ভারত

bangladesh india flag

BD_India_Flagভোটারহীন এক তরফা নির্বাচনকে ঘিরে সংঘাত-সংঘর্ষ ও ব্যাপক রক্তপাত সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ছেড়ে যাচ্ছে না ভারত। হাজারো বিতর্কের মধ্যেও তার পাশেই থাকছে প্রতিবেশী এ দেশ। শুধু নিজেদের সমর্থন দেওয়া নয়, নির্বাচন নিয়ে হাসিনার প্রতি ক্ষুব্ধ পশ্চিমা দেশকে নমনীয় করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে তারা।বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে এ নির্বাচনের যৌক্তিকতা তুলে ধরবে।

অবশ্য এসব উদ্যোগেও শেখ হাসিনা সরকারের শেষ রক্ষা হবে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান উদীয়মান এ পরাশক্তি। তারা শেখ হাসিনা সরকারের বর্তমান পরিস্থিতিকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন পরবর্তী অবস্থার সঙ্গে তুলনা করছে। তখনও বিরোধী দলকে বাইরে রেখে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হয়েছিল। আর পশ্চিমা দেশগুলোসহ প্রভাবশালী দাতা সংস্থাগুলো তা মেনেও নিয়ছিল। নির্বাচন নিয়ে কারো তেমন মাথা ব্যাথা ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্যাপক গণআন্দোলনের বিএনপি সরকারকে নতি স্বীকার করতে হয়েছিল। এবারের পরিস্থিতি তার চেয়ে খারাপ। কারণ বিরোধীরা যেমন এ নির্বাচন মানছে না, তেমনই পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে। খবর বিবিসি ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারত সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন বিষয়ে কোনো বক্তব্য আসেনি। পত্রিকা দুটি ভারতীয় কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ স্টাডি সেন্টারের প্রধান বীনা সিক্রিকে উদ্ধৃত করে বিবিসি জানায়, গত কয়েক মাসের দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে ভারত স্থির করেছে বাংলাদেশের সাংবিধানিক নির্দেশনার প্রতি সমর্থন দেওয়ার যা প্রকারান্তরে শেখ হাসিনাকে সমর্থনেরই সামিল!

প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ না নেওয়ায় দেশ-বিদেশে সমালোচিত হলেও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেও বৈধ এবং সঠিক মনে করছে এই প্রতিবেশি দেশ। এ সম্পর্কে বাংলাদেশে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত দেব মুখার্জী বলেন, পুরোপুরি সংবিধান মেনে এবং যে সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন করা প্রয়োজন সেই অনুযায়ীই এই নির্বাচন হচ্ছে,তাই এটা সম্পূর্ণ বৈধ।

এই নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না দেশটি। ক্ষেত্রবিশেষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে শেখ হাসিনা সরকারকে সহযোগিতা করতে পারে দেশটি। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখছে তারা।

পশ্চিমারা এমন ধারনা দিচ্ছে-নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বিরোধী দলের সঙ্গে নতুন করে সংলাপ শুরু করতে পারে। আর এতে সমঝোতা হলে তিনি পদত্যাগ করে নতুন নির্বাচন দিতে পারেন। এ বিষয়টিও বিবেচনায় রাখছে ভারত।

নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা ভারতে গিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব স্পষ্ট করে এসেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের মতে, ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের মতপার্থক্য মূলত জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে।

পাশাপাশি ৯৬ সালের নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখছে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ এই মিত্র দেশ। সেই ক্ষেত্রে উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানান ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা।