
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জয় পেয়েছেন ৭টি, জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছেন ১টি এবং তরিকত ফেডারেশন পেয়েছেন ১টি। গতকাল রাতে নগরীর তিন আসনের ফলাফল এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমে ঘোষণা করা হয় এবং জেলার ৭ আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় মিলনায়তনে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৫টি আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এবং একটি আসনে তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। মোট ৫৪ দশমিক ১৬ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
চট্টগ্রাম-২ আসনে (ফটিকছড়ি) ১৩৩ কেন্দ্রে ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৫১ জন ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীকের তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ড. মাহমুদ হাসান পেয়েছেন ১২ হাজার ৪৩৩ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাজিম উদ্দিন পেয়েছেন ৭৩১ ভোট।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে ১ লাখ ১২ হাজার ৯১৮ ভোট বেশি পেয়ে নজিবুল বশর নির্বাচিত হন। এই আসনে ভোট দিয়েছেন ৪৩ দশমিক ০৭ শতাংশ ভোটার।
চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা ৭৯টি কেন্দ্র থেকে ১ লাখ ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাতীয় প্রার্থীর এমএ ছালাম পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৬৬ ভোট এবং জাসদের প্রার্থী নুরুল আক্তার পেয়েছেন ৮৭৪ ভোট।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে আওয়ামী লীগের মিতা ১ লাখ ৮ হাজার ২৭৭ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন। এ আসনে মোট ভোট দিয়েছে ৬৬ শতাংশ ভোটার।
চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের ৯৯টি কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ১ লাখ ২৮ হাজার ২১৪টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী পেয়েছেন ১০ হাজার ১৯৭ ভোট।
নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সিরাজুল ইসলামের চেয়ে সামশুল হক চৌধুরী ১ লাখ ১৮ হাজার ১৭ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন। এ আসনে ৬৬ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছে।
চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-পশ্চিম পটিয়া) আসনের ৯৭ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯৮৫। অন্যদিকে, তার নিকটতম জাতীয় পার্টির প্রার্থী তপন চক্রবর্তী পেয়েছেন ৫ হাজার ৪১৮ ভোট।
এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৫৬৭ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন জাবেদ। ভোট পড়েছে ৬৯ শতাংশ।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের ১৩৮ কেন্দ্রের মধ্যে দুটি কেন্দ্র ভোটের আগের রাতের সহিংসতার জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় ১৩৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এ আসনে আওয়ামী লীগের ড.আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভি পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৮৬৬ ভোট। তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কাদেরী ৪ হাজার ৪৪৮ ভোট পেয়েছেন। ভোটগ্রহণের হার শতকরা ৩৩ শতাংশ।
উল্লেখ্য, বিএনএফ প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কাদেরী ভোট জাল ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেন। কিন্তু তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে ৯৭ হাজার ৪১৮ ভোট বেশি পেয়ে নদভি এগিয়ে থাকায় স্থগিত দুই কেন্দ্রে নির্বাচন হবে না বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
এদিকে, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড) আসনের আওয়ামী লীগের দিদারুল আলম ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮১৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাসদের প্রার্থী আফম মফিজুর রহমান পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৬২ ভোট। ওয়াকার্স পার্টির প্রার্থী দিদারুল আলম চৌধুরী পেয়েছেন ২ হাজার ১৩৬ ভোট।
চট্টগ্রাম ১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের ১৪২টি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের এম এ লতিফ ৬৪ হাজার ৩২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতসম প্রার্থী জাতীয় প্রার্থীর কামাল উদ্দিন চৌধুরী ১ হাজার ৯৯০ ভোট এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের মো.জসীম উদ্দিন বাবুল পেয়েছেন ৫৬৬ ভোট।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতয়ালী-বাকলিয়া) আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ৭৯ হাজার ৭৭৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী ওয়াকার্স পার্টির অ্যাডভোকেট আবু হানিফ পেয়েছেন ৩ হাজার ৫৯৯ ভোট। বিএনএফ প্রার্থীর অধ্যাপক আরিফ মঈনুদ্দিন ১ হাজার ৭৬২ ভোট পেয়েছেন ও ন্যাপের আলী আহমেদ নাজির পেয়েছেন ১ হাজার ৬৪১ ভোট।