
অতীতে মানুষ গুহাচারী ছিল, ভবিষ্যতে মানুষ কোন অজ্ঞাত স্থানচারী হবে তার হিসেব-নিকেশ ধারণাতীত, তবু ধারণা থেমে নেই। কেউ বলছেন মানুষ মঙ্গলচারী হতে যাচ্ছে, আবার কেউবা মনে করছেন দূর গ্যালাক্সির অচেনা কোন গ্রহচারী হতে চলেছে। সেই হিসেব না হয় সময়ের হাতে ছেড়ে দিলাম। কিন্তু ক্ষণিকের অবধারণ পৃথিবীর আগামি দিনের বিশেষত ২০১৪ সালের স্থাপনাগুলো কেমন হতে পারে তা বলে দেয়া যেতে পারে এখনই। সম্প্রতি, বিবিসি ২০১৪ সালের নয়টি নান্দনিক স্থাপনা সম্পর্কে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পাঠকদের সুবিধার্থে তা আবার উপস্থাপন করছে অর্থসূচকঃ
১) ১২২ লিডেন হল স্ট্রিটঃ যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অবস্থিত আগামীর এই স্থাপনাকে ডাকা হয় ‘চিজগ্রেটার’ নামে। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি এই ইমারতের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। বিশ্বখ্যাত স্থপতি রজারস স্ট্রিক হারবার এবং তার সহযোগীরা এর নকাশা প্রণয়ন করেন। ৭৩৭ ফুটের এই দালান গ্লাস এবং স্টিলের নান্দনিক সমন্বয় হিসেবে ইতিমধ্যে বিশ্বের ইমারত বিশেষজ্ঞদের কাছে সমাদৃত হয়েছে।
২) দ্য সিটাডেলঃ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে আগামিতে হয়ত পৃথিবীর পুরোটাই জলে নিমজ্জিত হবে। এর প্রেক্ষিতে ‘ভাসমান ওলন্দাজ’ নামে পরিচিত কোয়েন ওলথুইসের ওয়াটার-স্টুডিও তৈরি করছে ‘দ্য সিটাডেল’। নেদারল্যান্ডে অবস্থিত ভাসমান এই স্থাপনা আপদকালীন সময়ে মানুষের বসবাসের পরিকল্পনা থেকেই তৈরি করা হচ্ছে।
৩) স্কাই সিটি টাওয়ারঃ পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু দালান কোনটি? এই প্রশ্নের উত্তর গত কয়েক বছর ধরে ঘন ঘন পাল্টে যাচ্ছে। কিন্তু ২০১৪ সালের জন্য এই প্রশ্নের উত্তর হতে যাচ্ছে স্কাই সিটি টাওয়ার। ২৭৪৯ ফুটের এই আকাশচুম্বী স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে চিনের হুনান প্রদেশে।
৪) ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারঃ ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে সন্ত্রাসী হামলায় ধ্বংস-স্তুপে পরিণত হওয়া টুইন টাওয়ারের জায়গাতেই তৈরি হচ্ছে ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। নিউইয়র্কের সাউথ ম্যানহাটনে অবস্থিত এই স্থাপনার নির্মাণ কাজ শেষ হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে উঁচু দালানের স্থান দখল করে নিবে। ১৭৭৪ ফুটের এই স্থাপনার নকশা প্রণয়ন করেছেন ডেভিড চিল্ডস এবং তার সহযোগিরা।
৫) ফগ আর্ট মিউজিয়ামঃ হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত তিন জাদুঘর ফগ, বুসছ-রেইসিংগার এবং স্যাকলারকে মিলিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ফগ আর্ট মিউজিয়াম। অসাধারণ নান্দনিক সৌন্দর্যের এই জাদুঘরকে ভবিষ্যতের শিল্প গবেষণার যজ্ঞ ক্ষেত্র হিসেবে কল্পানা করছেন অনেকেই।
৬) মারকানা স্টেডিয়ামঃ ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অবস্থিত বিশ্বখ্যাত মারকানা স্টেডিয়ামে ২০১৪ সালের ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। এই লক্ষ্যে স্টেডিয়ামটিকে নতুন রুপে উপস্থাপনের লক্ষ্যে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সরকার। প্রস্তাবিত নকশা অনুযায়ী নান্দনিক ফুটবলের পাশাপাশি এই স্টেডিয়ামও চোখ ধাঁধিয়ে দিবে বলে আশা করছেন অনেকেই।
৭) স্পেস পোর্ট আমেরিকাঃ আগামী দিনে হয়ত মহাশূন্যের গন্তব্যে এই বন্দর থেকে ছেড়ে যাবে মহাকাশ যান। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোতে এই মহাকাশ বন্দর দেখাবে অনেকটা অতিকায় চোখের মত। ব্রিটিশ স্থপতি নরম্যান ফস্টার এর নকশা প্রণয়ন করেছেন।
৮) ইয়েট ক্লাব দে মোনাকোঃ সমুদ্র বন্দরে জাহাজ এবং দালানের সম্মিলিত চিত্র কি ধরনের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে পারে তা হয়ত মোনাকোর এই বন্দরকে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে যাবে। এই বন্দরের নকশাও প্রণয়ন করেছেন নরম্যান ফস্টার।
৯) রকবান্ড প্রজেক্টঃ চিনের রাজধানী সাংহাইকে নতুন রুপে সাজানোর লক্ষ্যে এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ডেভিড চিপ্পারফিল্ডের নকশা অনুসারে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০০৬ সালে। গত শতাব্দীর পুরোনো ভবনগুলোকে ভেঙে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উঁচু ভবনগুলোর সমাহারের মাধ্যমে সাংহাইকে নতুন রুপ দেয়া হবে এই প্রকল্পের অধীনে।