প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) ভালো যায়নি বিদায়ী বছরটার। বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে আগের বছরের চেয়ে রেমিট্যান্স কম এসেছে। আর পুরো বছরের রেমিট্যান্সও আগের বছরের চেয়ে কম।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ব্যাংকের মাধ্যমে ১২১ কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিটেন্স (প্রবাসি আয়)পাঠিয়েছে। ডিসেম্বরে আসা রেমিটেন্সের এ হার নভেম্বরের তুলনায় ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৪১ শতাংশ কম। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সব মিলিয়ে গত বছর এক হাজার ৩৮৩ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগের বছর তথা ২০১২ সালে এক হাজার ৪১৭ কোটি ডলার এসেছিল। এক বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ৩৪ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী,নভেম্বরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১০৬ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার। আর ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর)ব্যাংকের মাধ্যমে মোট রেমিটেন্স এসেছে ৬৭৭ কোটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার। প্রবাসিদের পাঠানো এ রেমিটেন্স গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬২ কোটি ৩২ লাখ ডলার কম। ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রেমিটেন্স এসেছিলো ৭৪০ কোটি ১৭ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য মতে,চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসীরা বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১২৩ কোটি ৮৪ লাখ মার্কিন ডলার। তার পরের মাস আগস্টে ১০০ কোটি ৫৭ লাখ মার্কিন ডলার। সেপ্টেম্বরে ১০২ কোটি ৫৬ লাখ মার্কিন ডলার। অক্টোবরে রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ১২৩ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। নভেম্বরে ১০৬ কোটি ১৪ লাখ ডলার এবং ডিসেম্বরে এসেছে ১২১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ৪০ কোটি ৫৫ লাখ মার্কিন ডলার। দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকের (কৃষি ও বেসিক ব্যাংক) মাধ্যমে এক কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। ৩০টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭৮ কোটি ৪ লাখ মার্কিন ডলার এবং বিদেশি ৯টি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার।
আলোচ্য সময়ে প্রবাসিদের পাঠানো রেমিটেন্স সব চেয়ে বেশি এসেছে ইসলামী ব্যাংকের বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ৩১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। এরপরের অবস্থান রাষ্ট্রায়াত্ত্ব অগ্রণী ব্যাংকের। প্রবাসিরা ১৫ কোটি ৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছে ব্যাংকটির মাধ্যমে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ১৩ কোটি ৪ লাখ ডলার। আর জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ১০ কোটি ৯৯ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা অর্থসূচককে বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পূর্ন স্থবির হয়ে পড়েছে। সেই সাথে অর্থনীতির আর একটি চালিকা শক্তি রেমিটেন্সও (প্রবাসি আয়) আসা অনেক কমে গেছে। এ সময়ে যদি রেমিটেন্স প্রবাহ কমে যায় তাহলে দেশের অর্থনীতি ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৮৪ কোটি ডলার। ২০১২-১৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলারে। #