‘জাপা প্রার্থীর পথের কাঁটা হতে পারেন স্বতন্ত্রের ড. মিজান’

Kishorgonj-2কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসন আওয়ামী লীগের দূর্গ হিসেবে খ্যাত। এখানে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী থাকলেও আসনটিকে ঘিরে জাতীয় রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ হলে্ও শেষ পর্যন্ত। জাপা প্রার্থীকে ছেড়ে দেয়া হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখানে প্রথমে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয় করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক নাসিরুল ইসলামকে। পরে আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারী বোর্ড তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়। এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়ায় সমঝোতার ভিত্তিতে জাপার পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নির্বাচনকালীন সরকারের প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুকে এ আসনটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থন দেয়। তিনি দলীয় প্রতীক ‘লাঙ্গল’ নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনের দু’বারের সংসদ সদস্য ডঃ মিজানুল হক দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘হরিণ’ মার্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। বর্তমানে দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণায় করিমগঞ্জ ও তাড়াইলের হাট-বাজারসহ সর্বত্র নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার পাশাপাশি চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। করিমগঞ্জের গুজাদিয়া টানপাড়া গ্রামের ভোটার নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে চুন্নুর চেয়ে ডঃ মিজান গ্রহণযোগ্য। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ড. মিজানের জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। আর এ ক্ষেত্রে চুন্নুর পথের কাঁটা হতে পারেন তিনি’।

জাপা প্রার্থী মুজিবুল হক চুন্নুর পক্ষে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিতরা ইতোমধ্যে গণসংযোগসহ প্রকাশ্যে জনসভায় বক্তৃতা দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এ সময় তারা এলাকার চলমান উন্নয়নের স্বার্থে আগামী নির্বাচনে চুন্নুর ‘লাঙ্গল’ মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. মিজানুল হকও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বেশ জোরেশোরেই। তিনি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গণসংযোগসহ পথসভায় বক্তৃতা করছেন। এ সময় তার আমলে করিমগঞ্জ ও তাড়াইলের অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি জাপা প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরছেন। এ সময় তিনি নিজের জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে জানান।

নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে নারী-পুরুষ মিলে সর্বমোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ৩ লাখ ১ হাজার ৪৬৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৫২ হাজার ৯০০ জন ও নারী ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৬৮ জন। উপজেলাওয়ারী করিমগঞ্জ উপজেলায় মোট ভোটার হচ্ছে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৩২ জন। এখানে পুরুষ হচ্ছে ৯৯ হাজার ১৩৭ জন ও নারী ৯৬ হাজার ১৯৫ জন। তাড়াইল উপজেলায় মোট ভোটার হচ্ছে ১ লাখ ৬ হাজার ১৩৬ জন। এখানে পুরুষ হচ্ছে ৫৩ হাজার ৭৬৩ জন ও নারী  হচ্ছে ৫২ হজার ৩৭৩ জন। করিমগঞ্জে ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৭৮টি ও ভোটকক্ষ ৪৩৮টি এবং তাড়াইলে ভোট কেন্দ্র ৪২টি ও ভোটকক্ষ ২২৬টি রয়েছে ।

এব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও রিটানিং অফিসারকে জিজ্ঞেসা করলে তিনি জানান, প্রার্থীরা শান্তিপুর্ণভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে এ প্রতিবেদককে জানান।

সাকি/