
১৮ দলের মার্চ ফর ডেমোক্রেসী কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের নির্বিচার গ্রেপ্তারে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিদিনই ১৫ থেকে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। গত এক সপ্তাহে শতাধিক লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে মার্চ ফর ডেমোক্রেসী অব্যাহত থাকায় আজ সোমবারও শহরের ৪টি বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। জেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক গুলোতেও লোকাল বাস চলাচল করছে না।ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচলও বন্ধ রয়েছে। জেলার ৬টি পয়েন্টে বসানো হয়েছে পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট।
এদিকে রোববার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা থেকে কয়েক’শ গজ দূরে ৭/৮টি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এসময় একটি ঔষধ বহনকারী গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং আরেকটি ট্রাকও ভাংচুর করা হয়।থানা থেকে দশ গজ দূরত্বে শহরের খালপাড় সড়কে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ অবিস্ফোরিত তিনটি ককটেল উদ্ধার করে সেখান থেকে। এঘটনার পরপর পুলিশ শহরের কান্দিপাড়া ও পাওয়ার হাউজ রোডে অভিযান চালায়। এসময় নির্বিচারে গ্রেপ্তারের অভিযোগ উঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। কান্দিপাড়ায় বড় মাদ্রাসার পূর্ব দিকে এক প্রবাসীকে আটক করলে সে চিৎকার শুরু করে এবং সে বিদেশ থেকে এসেছে বলে বলতে থাকে। পরে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এরপর কান্দিপাড়ার এক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। তাকেও নাজেহাল করে ছেড়ে দেওয়া হয়। পাওয়ার হাউজ রোডের একটি ঔষধের দোকান থেকে ঔষধ কিনে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ১৩/১৪ বছর বয়সী দুই কিশোরকে মারধর করে আটক করে পুলিশ। কান্দিপাড়া মাইমল হাটির নদীরপাড়ের একটি ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে সালমান নামের ১৬ বছর বয়সী এক রং মিস্ত্রিকে আটক করে পুলিশ।এ অভিযানের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গেও দূর্ব্যবহার করে পুলিশ। বিএনপির নেতাকর্মীদের ঘরেঘরে তল্লাশী চালানোর অভিযোগ করেন জেলা বিএনপির নেতারা। পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী গত ২৯শে ডিসেম্বর ১৫ জন, ২৮ শে ডিসেম্বর ১৬ জন, ২৭ শে ডিসেম্বর ১২ জন, ২৬ শে ডিসেম্বর ১৮ জন,২৫ শে ডিসেম্বর ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশ। এছাড়া এর আগের কয়েকদিনেও ১০/১৫ জন করে গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক এবিএম মোমিনুল হক জানান, গতকাল রোববার তাদের যেসব নেতা-কর্মী ও সমর্থক ঢাকায় যেতে পারেননি তারা মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সেটি করতে দেয়নি এবং মারমুখী আচরণ করে। অথচ ঐ সময় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা লাঠি-দা নিয়ে পুলিশের সামনেই মিছিল করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রব নির্বিচার গ্রেপ্তারের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন সদর থানা পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। জেলা পুলিশ মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করে।
সাকি/