
২৯ ডিসেম্বর রোববার ঢাকা অভিমুখে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচিকে ঘিরে গতকাল থেকে ঢাকামুখী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজ আবার রাজধানীতে গণপরিবহনের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। রিক্সা-সিএনজির দেখা মিললেও বেশ কিছু সড়কে তাও চলতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে একদিকে যেমন জনমনে আতংক বাড়ছে, তেমনি অন্যদিকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষকে।
আগামী রোববার নয়া পল্টনে বিএনপি-জামায়াত জোটের সমাবেশ হওয়ার কথা। এ কর্মসূচিকে ঘিরে নিরাপত্তার স্বার্থে গণ-পরিবহণ চলাচল কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন রুটে দূরপাল্লার বাস চলাচল ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। তবে আজ সকাল থেকে রাজধানীর ভিতরের গণপরিবহনের উপরেও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তাতে করে অসহনীয় দূর্ভোগের মুখে পড়েছে। পরিবহন না পেয়ে অনেকে বাসায় ফিরে যাচ্ছে।জনমনে আতংক বিরাজ করায় অনেকে রাস্তায় বের হচ্ছে না।
সায়দাবাদ বাস স্টান্ড ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর পার্শ্ববর্তী জেলাসহ দূরপাল্লার সব রুটের কাউন্টারগুলো বন্ধ রয়েছে। গণপরিবহন বলাকা সার্ভিসের এক সুপারভাইজার মোহাম্মাদ মুকুল জানান, ‘আজ সরকারের পক্ষ থেকে বাস চালাতে নিষেধ করা হয়েছে। হরতাল-অবরোধ হলেও বাস চালাতে পেরেছি। এখন সরকারি ভাবে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ায় কোনো উপায় নেই।দিনে কাজ করে দিনে খাওয়া মানুষের দু:খ দেখার কেই নেই।’
এদিকে কমলাপুর রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের কোনো ট্রেন সকাল থেকে স্টেশনে প্রবেশ করেনি। আবার এই অঞ্চলে উদ্দ্যেশে আসা যাত্রীরা স্টেশনে এসে পড়েছেন বিপাকে। কেউ আবার বাসায় ফিরে যাচ্ছে। কেউবা বসে আছেন ট্রেনের আশায়। তবে কখন এই ট্রেন স্টেশনে আসবে। আদৌও আসবে কি না । তার সঠিক তথ্য দিতে পারছেন না তথ্য অনুসন্ধান কেন্দ্র। স্টেশন মাস্টার কিংবা ব্যবস্থাপককে পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলিয়ে অতি অসহায় হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা। সকাল থেকে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাতে ২ থেকে ৩ টি ট্রেন ছেড়ে গেছে।
আরিফুর রহমান নামের রাজশাহীগামী যাত্রী জানান, ‘পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরেছি টাঙ্গাইল থেকে ওই অঞ্চলের ট্রেন আটকে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে রাজশাহীর কোনো ট্রেন আজ ঢাকাতে প্রবেশ করছে না’।
গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ জন্য ২৯ ডিসেম্বর রোববার জনগণকে পতাকা হাতে ঢাকায় আসার আহ্বান জানান তিনি। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণজমায়েতের ঘোষণা দেন জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এ কর্মসূচিকে ঘিরে গতকাল শুক্রবার থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকা অভিমুখী যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং পয়েন্টে পয়েন্টে পুলিশি-তল্লাশী আরও জোরদার করা হয়। কোথাও কোথাও পরিবহণ শ্রমিকদের হরতাল কর্মসূচির নাম দিয়ে দূর পাল্লার যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।