বাংলাদেশে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন ও প্রচারণায় নিরাপত্তার কারণে টি-টোয়েন্টি বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপে পাকিস্তানের অংশগ্রহন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর পাকিস্তানের মতো ক্রিকেটের বড় শক্তি বিশ্বকাপে অংশ না নিলে বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ২০১৪ আয়োজন নিয়ে নতুন করে ভাবতে পারে ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি।
শুক্রবার প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)এ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ২০১৪ বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টি নিয়ে পাকিস্তানের এ আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে।
এক সূত্রের বরাত দিয়ে পিটিআই জানায়, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছে এবং জানুয়ারিতে আইসিসি কী সিদ্ধান্ত নেয় তার জন্য অপেক্ষা করছে।
সূত্রটি জানায়, পাকিস্তান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। একইসঙ্গে পিসিবি আশা করছে মার্চ-এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় এই টুর্নামেন্টটি অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়া হবে।
পিসিবির সাথে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে পিটিআই জানায়, এই দুই টুর্নামেন্টই বহুজাতিক টুর্নামেন্ট, এ কারণেই আইসিসি এবং এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) বাংলাদেশে টুর্নামেন্ট আয়োজনের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয় সেটা জানার অপেক্ষায় পিসিবি। দেশটির সামগ্রিক পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে মোড় নিলে পাকিস্তানের টুর্নামেন্টগুলো থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ার অধিকার আছে। এক্ষেত্রে পাকিস্তান সরকারের নির্দেশ মেনেই পরবর্তী করনীয় ঠিক করবে পিসিবি।
এদিকে এ সংবাদ প্রকাশের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দেশের রাজনৈতিক কোনো সমস্যা ক্রিকেট প্রভাব ফেলবে না বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নিয়ে সৃষ্ট শঙ্কায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আইসিসিকে আশ্বস্ত করেছে যে, আগামী জানুয়ারির পরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তখন আর টুর্নামেন্ট নিয়ে কোন ধরণের শঙ্কা থাকবে না”।
বিসিবির সভাপতি জানান, বাংলাদেশে আব্দুল কাদের মোল্লাহর ফাঁসি নিয়ে পাকিস্তানের সংসদে শোক প্রস্তাব কেন্দ্র করে দু’দেশের মধ্যে কুটনৈতিক সর্ম্পকে সমস্যা হলেও ক্রিকেট নিয়ে কিছু হবে না। ক্রিকেট সকল ধরনের রাজনীতির বাহিরে থাকবে। আর বিশ্বকাপ ক্রিকেট শুরু হওয়ার আগেই দেশের সার্বিক অবস্থা ভালো হয়ে যাবে। তাই বাংলাদেশে আসন্ন বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। পাকিস্তানের আশঙ্কা নিয়ে আমরা আইসিসি কিংবা পিসিবির কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাইনি।
প্রসঙ্গত,১৯৭১ সালের মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি হওয়ার পরই পাকিস্তান পার্লামেন্টে একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস করে। এরপরই সামগ্রিক পরিস্থিতি পাকিস্তানের বিপক্ষে চলে যায়। বাংলাদেশে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন চরমে ওঠে এবং আন্দোলনকারীরা পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরণের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে।
এইউ নয়ন