
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ-হরতালের কারণে রাজশাহীর বিভিন্ন সীমান্তে চোরাকারবারি সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়েছে উঠেছে। হরতাল-অবরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী ব্যস্ত হয়ে পড়ায় জেলার বিভিন্ন সীমান্তে বাধাহীন তৎপরতা শুরু করেছে অস্ত্র ও মাদক সিন্ডিকেট। জেলার চারঘাট, বাঘা, পবা ও গোদাগাড়ি উপজেলার সীমান্ত এলাকার চোরাকারবারী সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এ সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাধাহীনভাবেই ভারত থেকে পাচার করে নিয়ে আসছে ফেন্সিডিল, ইয়াবা, হেরোইনসহ আগ্নেয়াস্ত্রের চালান।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যস্ত হয়ে পড়ায় সীমান্তে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অস্ত্র ও মাদক পাচারকারীরা। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে টানা অবরোধ ও হরতালে আইনশৃখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ডিউটিতে ব্যস্ত। ফলে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালিত করতে পারছে না। এ অবস্থায় অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ীরা হয়ে উঠছেন বেপরোয়া।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্ত ঘেঁষা রাজশাহীর চারঘাট, বাঘা, পবা ও গোদাগাড়ি উপজেলায় অনেকটা বাঁধাহীনভাবে চোরকারবারীরা তাদের অবৈধ পণ্য পাচারে নেমেছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, এখন সীমান্ত পেরিয়ে অবাধে আসছে ফেন্সিডিল, হেরোইন, ইয়াবা। এছাড়া, আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও বিষ্ফোরক দ্রব্যও সহজে চলে আসছে। অনেক সময় আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেও বেশিরভাগ চলে যাচ্ছে সুবিধামত জায়গায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চারঘাট-বাঘা সীমান্তবর্তী এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, এ অবরোধে নাশকতা ও সংঘর্ষ ঠেকাতে পুলিশের সদস্যরা ব্যস্ত থাকায় সীমান্তে দৃষ্টি দিতে পারছে না। এই সুযোগে চোরাচালানীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শত শত মোটরসাইকেল যোগে এখন পাচার হয়ে আসছে মাদক আর আগ্নেয়াস্ত্র। এক সময় সীমান্তবর্তী উপজেলার মাদক স্পটগুলোতে পুলিশি আতংক থাকলেও এখন বাধাহীনভাবে চলছে সবকিছু।
গত কয়েক মাসে চারঘাট-বাঘা থানার উল্লেখ্যযোগ্য মাদকবিরোধী অভিযানের সফলতা নেই বললেই চলে। অপর দিকে মাদক না পেলেও সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়ি হওয়ায় অনেক সাধারণ মানুষকে পুলিশ হয়রানি করে বলেও অভিযোগ করে সীমান্তবর্তী এলাকার একাধিক ব্যক্তি।
এ ব্যাপারে চারঘাট মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার গোলাম মোর্তজা বলেন, অবরোধসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিতে পুলিশসহ প্রশাসনের সদস্যরা রাতদিন সমানে ডিউটি দিচ্ছে। এই সুযোগে মাদক পাচারকারীরা সক্রিয় হতে পারে। তবে সেদিকও পুলিশের দৃষ্টি রয়েছে। রাজশাহী জেলা পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, নাশকতা, অবরোধ আর রাজনৈতিক পরিস্থিতি রুখতে পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে। এই সুযোগে মাদক সিন্ডিকেট তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে। প্রায়ই ধরা হচ্ছে মাদকের চালান।