উদ্বোধনের দু’বছরেও চালু হয়নি ৫০শয্যার কার্যক্রম

Chorbodrashonফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উদ্বোধনের দুই বছর পার হলেও ৫০ শয্যার কার্যক্রম এখন পর্যন্ত চালু হয়নি।

প্রায় ৪ বছর আগে ৫০ শয্যার ভবন নির্মানের পর ২০১১ সালে তা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়। কিন্তু হাসপাতালে শুধু বহিঃবিভাগে কিছু চিকিৎসাপত্র ছাড়া আর কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না রোগীরা।

হাসপাতালে যে কোনও ধরনের অপারেশন, গর্ভবতী মায়ের সিজার কার্যক্রম, নাক, কান, গলা, চোখ বা এ্যানেসথিয়া কোনও প্রকার চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন না উপজেলার রুগীরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: হাফিজুর রহমান বলেন, শুধু রাজনৈতিক কারনে দুই বছর  আগে ৫০ শয্যার হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫০ শয্যা হাসপাতালের প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া যায়নি বলে রুগীরা উন্নত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।

তিনি আরও জানান, প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও ডাক্তার চলে আসবে। এতে যে কোনও ধরণের অপারেশন, সিজার, এ্যানথেসিয়া কার্যত্রম চালু হবে। একই সাথে গাইনী, নাক, কান, গলা ও চোখের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের হাসপাতালে পোষ্টিং দেয়া হবে। উর্ধ্বতন মহলে বার বার আবেদন করার পরও  প্রশাসনিক অনুমোদন না পাওয়ার কারনে হাসপাতালে ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু নেই”।

হাসপাতাল ঘুরে জানা যায়, রোগীদের সেবা প্রদানের মধ্যে অন্ত:বিভাগ চিকিৎসা, বহি:বিভাগ চিকিৎসা, জরুরী চিকিৎসা, এম্বুলেন্স সেবা, এক্সরে সেবা, প্যাথলজী, যক্ষা ও কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রন, জরুরী প্রসূতি সেবা, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী, পরিবার পরিকল্পনা এবং ও.আর.টি. কর্ণার তালিকায় রয়েছে। মূলত: স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিছু সেবা প্রদান করা হলেও বেশীরভাগ স্বাস্থ্য সেবার জন্য উপজেলাবাসীকে জেলা শহরে ছুটতে হচ্ছে।

হাসপাতালের বহি:বিভাগের জরুরী ঔষধ প্রদানের তালিকায় ৩৯ প্রকারের ট্যাবলেট, ১৫ প্রকার সিরাপ ও ৭ প্রকারের ইনজেকশন সহ কয়েক প্রকার স্যালাইন সরবরাহর তালিকা থাকলেও সর্বোচ্চ ১০ পদের ট্যবলেট আর ওয়াল স্যালাইন দিয়েই চলছে হাসপাতালের যাবতীয় সেবা কার্যক্রম।

এছাড়া হাসপাতালে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছাড়া ৬ জন মেডিকেল অফিসার, একজন গাইনী, একজন ডেন্টাল ও একজন এনেসথেসিয়া চিকিৎসক থাকার শর্ত থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৩ জন ডাক্তার।

হাসপাতালের একমাত্র এক্সরে মেশিন গত চার বছর ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা তা মেরামতের ব্যবস্থা নিচ্ছেন বরেও ভূক্তভোগীদের অভিযোগ। অনেক পুরাতন এম্বুলেন্স প্রায়ই যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে থাকে, এম্বুলেন্স চালু রাখতে বেসরকারিভাবে টাকা খরচ করতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

হাসপাতালে রুগীদের পানি সরবরাহের কাজ প্রায় বিঘ্ন ঘটছে। হাসপাতাল প্রতিষ্ঠলগ্ন থেকে বসানো পাম্প প্রায়ই নষ্ট হওয়ায় রুগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

এছাড়া নোংড়া, আবর্জনাময় ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে স্বাস্থ্যসেবা। হাসপাতালের ভর্তি রোগী দলিল উদ্দিন (৬৫) ও মো. মহিউদ্দিন (১৬) সহ অনেকে জানায়, হাসপাতালে খাবারের মান অত্যান্ত নিম্নমানের।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: হাফিজুর রহমান বলেন, প্রতি রুগীর পথ্যের জন্য দৈনিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭৫ টাকা, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির বাজারে এতো অল্প টাকায় আর কি পাওয়া যায়।