রাজধানীর বাজারে হরতাল-অবরোধে কমতে শুরু করেছে সবজির সরবরাহ। দেশ ক্রমেই অস্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে বাজারের অবস্থান কোথায় যায় বলা মুশকিল বলে উল্লেখ করেছেন সবজি ব্যবসায়ীরা।
পার্শ্ববর্তী নরসিংদি, সাভার, মানিকগঞ্জ থেকে কিছু সবজি আসলেও তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। যার কারণে সবজির ভরা মৌসুমের প্রথম দিকেও এর চড়া মূল্য।
রোববার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল, মতিঝিল এজিবি কলোণী বাজার ও শান্তিনগরের সবজি ব্যবসায়ীদের সাথে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ কালে ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন।
বাজারে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বেগুন, শসা, কাঁচামরিচ, শীম, গাজর, করলা, উচ্ছে, ঢেঁড়স, শালগম, বরবটি, কচুরলতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। সবজির দাম ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
অন্যদিকে অবরোধের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। কারো কারও অভিযোগ হরতাল অবরোধের সময় অনেক ব্যবসায়ীরা অযাচিত ভাবে পণ্য দাম নিজেরাই বাড়িয়ে দেয়।
সবজি ব্যবসায়ী আবদুল বারেক বলেন, সবজি বাজারে চাহিদার তুলনায় কম তাই দাম বেশি। কিছু সবজি সাভার, মানিকগঞ্জ, নরসিংদি ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আসে তা অপ্রতুল।
তিনি বলেন, এখন সবজির মৌসুম দাম কম হওয়ার কথা কিন্তু দেশের রাজনীতির জন্য মানুষ সবজি কম দামে কিনতে পারতেছে না।
আজকের বাজার চিত্র:
কাঁচাবাজারঃ
কাঁচাবাজারে আজ দেখা গেছে, প্রতিকেজি শসা ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৫০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, তাল বেগুন ৫০ টাকা, লাল শিম ৫০ টাকা, সবুজ শিম ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, আলু ২০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর মুখি ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৭০ টাকা, ওলকপি ৫০ টাকা, শালগম ৫০ ও চিচিঙ্গা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রতিপিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৬০ থেকে ৯০ টাকা ও লাউ ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, পানি কচু ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে এবং প্রতিহালি কাঁচকলা ২৫ টাকা ও লেবু ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, বাজারে লালশাক, কলমি শাক, লাউ শাক, পালং শাক, মুলা শাক, পুঁই শাক, ডাটা শাকসহ নানা ধরনের শাকের আটি ১০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পুদিনা পাতা ১০০ গ্রাম ৩০ টাকা, ধনেপাতা প্রতি ১০০ গ্রাম ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদিঃ
মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, চায়না বড় রসুন ৮৫ টাকা, দেশি রসুন ৮০ টাকা, একদানা রসুন ১২০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ান আদা ১৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ১৮০ টাকা, হলুদ ১২০ টাকা, হলুদের গুড়া ১৮০ টাকা, মরিচের গুড়া ২০০ টাকা, ধনিয়া ৮০ টাকা, আটা (প্যাকেট) ৪০ টাকা, ময়দা (প্যাকেট) ৫০ টাকা, দারুচিনি ৩০০ টাকা, এলাচি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, জিরা ৩৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, বেশন ৯০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১২০ টাকা, ভারতীয় মশুর ডাল ৮০ টাকা, খেসারি ডাল ৪৫ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, ছোলা ৫০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৪২ টাকা, মাসকলাই ১২০ টাকা, বুট ৫০ টাকা, খোলা চিনি টাকা, প্যাকেট চিনি ৫৪ টাকা ও প্রতি লিটার সয়াবিন খোলা ৯০ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিন ১১৭ টাকা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
চালঃ
আজ চালের বাজারে প্রতিকেজি নাজিরশাইল ৫৮ টাকা, মিনিকেট ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, লতা আটাশ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, মোটা চাল ৪২ টাকায়, জিরা নাজির ৫৫ টাকা, আটাশ ৪২ টাকা, পাইজাম ৪০ টাকা, চিনি গুড়া ১১০ টাকা, পারিজা ৩৮ টাকা, বিআর-২৮ ৪০ থেকে ৪২ টাকা, বিআর-২৯ ৪০ টাকা, হাসকি ৪০ টাকা, স্বর্ণা ৩৬ টাকা থেকে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডিমঃ
আজকে বাজারে প্রতি হালি লেয়ার মুরগির লাল ও সাদা ডিম ২৮ টাকা, হাঁসের ডিম ৪০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগির ডিম ৪০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৪০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মাছঃ
মাছের বাজারে আজ ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের বেশি প্রতিহালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকা। এক কেজি ওজনের বেশি ইলিশের পিস ৬০০ টাকা ও প্রতিকেজি জাটকা ৩০০ টাকা, চন্দনা ইলিশ ১৬০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ টাকা, রুই মাছ ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ টাকা, চিংড়ি (বড়) ১ হাজার ২০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ টাকা, দেশি কৈ ৩০০ টাকা, টাকি ১৪০ টাকা, সিলভার কার্প ১২০ টাকা, মলাঢেলা ২০০ টাকা, বাইলা মাছ ৫৫০ টাকা, কাচকি মাছ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুটকি মাছঃ
শুটকি মাছ প্রতি ১০০ গ্রাম চিংড়ি শুটকি মানভেদে ৩০ টাকা থেকে ৭০ টাকা, টাকি ৬০ টাকা, কাসকি ৬০ টাকা, লইট্যা শুটকি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাইম মাছের শুটকি ৮০ টাকা, চাপিলা শুটকি ৬০ টাকা, পুটি মাছের শুটকি ৬০ টাকা, নলা মাছের শুটকি ৬০ টাকা, চান্দা মাছের শুটকি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি ইলিশ মাছের শুটকি ৭০০ টাকা ও কাইলা শুটকি ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাংসঃ
মাংসের বাজারে গরুর মাংস ২৮০ টাকা ও খাসি ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের প্রতিটি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা, ১৪ ছটাক ওজনের মুরগি ২৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৪০ টাকা, হাঁস ৩০০ টাকা, ভেড়া ও ছাগীর মাংস ৪৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ফলঃ
আজ ফলের বাজারে প্রতিকেজি আপেল ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, মালটা ১২০ টাকা, আঙুর ৪৫০ টাকাও প্রতি ডজন কমলা ২০০ থেকে ২২০ টাকা, বেদানা ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিহালি সাগর কলা ২৫ টাকা, নেপালি কলা ১৫ টাকা, শবরী কলা ২৫ টাকা, চাপা কলা ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেয়ারা ১২০ টাকা, আমড়া ১২০ টাকা, আমলকি ১৫০ টাকা ও জলপাই ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিপিস জাম্বুরা ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, বেল ৮০ থেকে ১৫০ টাকা, আনারস প্রতিপিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসএস/এআর