
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি কাসেম ড্রাইসেলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে হিসাব কারসাজির অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ ২০১২-১৩ হিসাব বছরে কোম্পানিটি লোকসান করলেও কারসাজির মাধ্যমে একে লাভজনক দেখানো হয়েছে।
কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, আলোচিত বছরের এর শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে এক টাকা ১৭ পয়সা।কিন্তু বাংলাদেশ হিসাব মান (বিএসএ)অনুসরণ করা হলে কোম্পানির কোনো মুনফাই থাকে না।উল্টো শেয়ার প্রতি লোকসান দাঁড়ায় ৪৭ পয়সা। কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে বার্ষিক হিসাবে নিট মুনাফা বাড়িয়ে দেখিয়েছে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে ইতোমধ্যে কোম্পানিকে চিঠি দিয়েছে তারা।
উল্লেখ, গত ৩০ জুন কাসেম ড্রাইসেলসের হিসাব বছরশেষ হয়েছে। এর মধ্যে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)অনুষ্ঠিত হয়েছে কোম্পানিটির। কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে হিসাব কারসাজির ওই চিত্র পাওয়া গেছে।
কোম্পানির নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ইনকাম স্টেটমেন্ট বা আয় বিবরনীতে তিন কোটি ৫৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিট মুনাফা দেখানো হয়েছে। আলোচিত বছরে কোম্পানি ১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। সেখান থেকে প্রশাসনিক ব্যয়,পণ্য বিপণন ও বিতরণ ব্যয়,ব্যাংক ঋণের সুদ,আয় কর ইত্যাদি বাদ দিয়ে ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা নিট মুনাফা হয়েছে বলে হিসাবে দেখিয়েছে কাসেম ড্রাইসেলস।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অব একাউন্টিং-এর ১৬ ধারা অনুসারে,নিট মুনাফা নির্ধারণের আগে আয় থেকে প্রযোজ্য সব ধরনের অবচয় বাদ দিতে হয়। কোম্পানিটি তার বার্ষিক প্রতিদেনের পরিশিষ্টে (পরিশিষ্ট-এ) ৫ কোটি টাকা অবচয়ের হিসাব দেখিয়েছে।কিন্তু আয় বিবরনীতে তা দেখানো হয়নি। সেখানে অবচয় আড়াল করা হয়েছে।
কোম্পানির পরিচালন মুনাফা থেকে ওই অবচয় বাদ দিলে নিট মুনাফা হয় ঋণাত্মক। অর্থাৎ মুনাফার পরিবর্তে এটি লোকসানি কোম্পানিতে পরিণত হয়। নিট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বর্তমানে কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৪ লাখ। এ হিসেবে শেয়ার প্রতি লোকসান দাঁড়ায় ৪৭ পয়সা।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কাসেম ড্রাইসেলসের কোম্পানি সচিব জাহাঙ্গীর আলম প্রথমে ফোনে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি তাদের অফিসে গিয়ে আলোচনা করার পরামর্শ দেন। বিএসইসি তাদের কাছে চিঠি দিয়ে বিষয়টিতে ব্যাখ্যা চেয়েছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন,এসব বিষয় কোম্পানির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মো.জাকারিয়া দেখাশোনা করেন। তিনি তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।অর্থসূচকের পক্ষ থেকে পর পর তিন দিন কয়েক দফা চেষ্টা করেও সিএফ্ওকে পাওয়া যায় নি। কয়েক বার রিসিপসন থেকে জানানো হয়েছে,তিনি অফিসে আছেন।তারপর কে কোথা থেকে ফোন করছেন তা জানতে চেয়েছেন।কিন্তু পরিচয় দেওয়ার পর কিছুক্ষণ লাইনে রেখে জানানো হয়েছে,তিনি তার আসনে নেই।সিএফও জাকারিয়ার মোবাইল নাম্বার চেয়েও পাওয়া যায় নি।